মালয়েশিয়ার কোম্পানিতে নারী পরিচালক নিয়োগ বাধ্যতামূলক

মালয়েশিয়ার কোম্পানিতে নারী পরিচালক নিয়োগ বাধ্যতামূলক

যেকোনো কোম্পানিতে পরিচালনা পরিষদে কমপক্ষে একজন নারী পরিচালক রাখার নিয়ম বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মালয়েশিয়ায়। এই নির্দেশ কার্যকর হবে আগামী বছর থেকে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে কোম্পানি পরিচালনায় নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বলা হয়েছে, শুক্রবার আগামী বছরের জাতীয় ব্যয় পরিকল্পনা প্রকাশ করেন দেশটির অর্থমন্ত্রী জাফরুল আবদুল আজিজ। এতে তিনি বলেছেন, অনেক বড় যেসব কোম্পানি আছে তাতে নারী পরিচালক নিয়োগের বিধান কার্যকর হবে ২০২২ সালের ১লা সেপ্টেম্বর থেকে। অন্য প্রতিষ্ঠানে এই নির্দেশ কার্যকর হবে ২০২৩ সালের ১লা জুন থেকে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ব্লুমবার্গ।

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীদের ভূমিকার স্বীকৃতি এবং তাদের নেতৃত্বকে শক্তিশালী করতে এ ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।

এর মধ্য দিয়ে পরিচালনা পরিষদ কার্যকর হবে। অর্থনীতিতে নারীদের অবদান নিয়ে কখনোই বিরোধ নেই। তাদের সেই অবদানকে আরো সামনে এগিয়ে নেয়া উচিত। সরকারগুলো, রাজনৈতিক গ্রুপগুলো এবং নির্বাহীরা গবেষণা করে দেখেছেন যে, যেসব পরিচালনা পরিষদে বহুত্ব থাকে, তারা উন্নত সিদ্ধান্ত নেন। এর পাশাপাশি আছে বিভিন্ন সম্ভাবনা। এ জন্য নারীদেরকে পরিচালনা পরিষদে নিয়োগ দেয়ার দিকে ঝুঁকছে বিশ্ব। তবে মালয়েশিয়ার এই উদ্যোগ এখনও অনেক নারীত্ববাদী গ্রুপের প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ করতে পারেনি। অলাভজনক অল ওমেন্স অ্যাকশন সোশাইটি’র নির্বাহী পরিচালক নিশা সাবানায়াগাম বলেছেন, সরকার অনুধাবন করতে পেরেছে, কোম্পানিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীদের প্রতিনিধিত্বে ঘাটতি আছে। এ জন্য সরকারের প্রশংসা করতে হয়।

তিনি আরো বলেন, সরকারের উচিত এর পরিববর্তে শতকরা ৩০ ভাগ নারী প্রতিনিধিত্ব স্থির করার টার্গেট নেয়া। তিনি আরো বলেন, লিঙ্গগত সমতা অধিক সৃষ্টিশীলতা এবং উদ্ভাবন সৃষ্টি করে। সরকারকে প্রশাসনিক পর্যায়ে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন ওমেন্স সেন্টার ফর চেঞ্জ-এর প্রোগ্রাম পরিচালক ক্যারেন লাই।

বর্তমানে মালয়েশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুবের মন্ত্রীপরিষদ ৭০ সদস্যবিশিষ্ট। এতে নারী আছেন মাত্র ৯ জন। এক্ষেত্রে পার্লামেন্ট এবং রাজ্য পরিষদগুলোতে নারীরা অনেক বেশি পিছিয়ে আছে বলে দাবি করেন ক্যারেন লাইন। বলেন, এতে নাগরিকদের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়ছে। মালয়েশিয়ায় বড় ধরনের ১০০ পাবলিক কোম্পানির পরিচালনা পরিষদে শতকরা প্রায় ২৫ ভাগ আছেন নারী প্রতিনিধি।

মন্ত্রী জাফরুল বলেন, বুরসা এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত অনেক কোম্পানির মধ্যে ২৫২ টি কোম্পানি আছে। এর মধ্যে শতকরা ২৭ ভাগ কোম্পানি আছে, যেখানে পরিচালনা পরিষদে কোনো নারীকেই রাখা হয়নি।

মন্ত্রী এদিন নারী ও কন্যা শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির তদন্তের জন্য পুলিশ ইউনিটকে শক্তিশালী করতে এক কোটি ৩০ লাখ রিঙিত বরাদ্দ ঘোষণা করেন। এর পাশপাশি সরকার নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতায় সচেতনতা বাড়ানোর কর্মসূচি হাতে নেবে। গৃহে নির্যাতিত ভিকটিমের জন্য আশ্রয়ও বৃদ্ধি করা হবে। মিস নিশা দাবি করেন, আমরা আশা করবো এই অর্থের কিছুটা বরাদ্দ রাখা হবে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া মনিটরিং করতে, তার অগ্রগতি অথবা পারফরমেন্ট সম্পর্কে রেকর্ড তৈরি করতে।