বেলারুশ-পোল্যান্ড সীমান্তে অভিবাসী সংকটের জন্য পশ্চিমারা দায়ী: পুতিন

বেলারুশ-পোল্যান্ড সীমান্তে অভিবাসী সংকটের জন্য পশ্চিমারা দায়ী: পুতিন

ইরাক ও আফগানিস্তানের যুদ্ধের দিকে ইঙ্গিত করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, বেলারুশ-পোল্যান্ড সীমান্তে অভিবাসী সংকটের পেছনে বেলারুশ নয় বরং পশ্চিমা দেশগুলো দায়ী। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

রাশিয়া বেলারুশের অন্যতম প্রধান মিত্র দেশ। বেলারুশের প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অভিযোগ—দেশটি হাজারও অভিবাসীকে (প্রধানত মধ্যপ্রাচ্য থেকে) পোল্যান্ডে অবৈধভাবে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করতে উসকানি দিয়ে আসছে। একে ‘হাইব্রিড হামলা’ হিসেবে দেখছে ইইউ।

ইইউ যখন বেলারুশের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছে, ঠিক তখন ভ্লাদিমির পুতিন বললেন, তিনি মনে করেন—বেলারুশ অভিবাসী সংকটের জন্য দায়ী নয়। পুতিন গতকাল শনিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।

পুতিন বলেন, ‘ভুলে গেলে চলবে না, অভিবাসীদের নিয়ে এ সংকটের উৎপত্তি কোথা থেকে... এ সমস্যাগুলোর জন্য কি বেলারুশই দায়ী? না, এসব সমস্যা পশ্চিমা ও ইউরোপীয় দেশগুলো নিজেরাই সৃষ্টি করেছে।’

ইরাক ও আফগানিস্তানের সংঘাতের কথা উল্লেখ করে পুতিন বলেছেন, বেলারুশ সীমান্তে থাকা অভিবাসীদের মধ্যে ইরাকি কুর্দি ও আফগানরাও রয়েছে।

‘এতে বেলারুশের হাত নেই... তারা (অভিবাসনপ্রত্যাশী) বেলারুশ হয়ে (পোল্যান্ড সীমান্তে) এসেছে বলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। কারণ, বেলারুশে এসব দেশ থেকে আগতদের জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার রয়েছে’, যোগ করেন পুতিন।

এদিকে, বেলারুশ-পোল্যান্ড সীমান্তে অভিবাসী সংকট প্রকট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউক্রেনীয় সীমান্তের কাছে রুশ সৈন্যদের গতিবিধি এবং সম্ভাব্য হামলার ব্যাপারে শঙ্কা প্রকাশ করেছে পশ্চিমাবিশ্ব। অন্যদিকে, ওই অঞ্চলে ন্যাটোর কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি নিয়ে অভিযোগ করেছে রাশিয়া।

ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোটের কয়েকটি সদস্য দেশ কৃষ্ণ সাগরে রুশ সীমান্তের কাছে যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়ে যুদ্ধের উসকানি দিচ্ছে। কৃষ্ণ সাগরে এগুলো তাদের অপরিকল্পিত মহড়া। তারা শুধু শক্তিশালী নৌবাহিনীই পাঠাচ্ছে না বরং কৌশলগত বিমানসহ যুদ্ধবিমানও পাঠাচ্ছে। এটি আমাদের জন্য মারাত্মক চ্যালেঞ্জ।’

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা কৃষ্ণ সাগরের আকাশে ন্যাটো জোটের একাধিক গোয়েন্দা উড়োজাহাজ শনাক্ত করেছে। পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে যে গুপ্তচরবৃত্তি জোরদার করেছে—তার অংশ হিসেবে এসব উড়োজাহাজ পাঠানো হয়েছে বলে রুশ মন্ত্রণালয় মনে করছে।

রুশ সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে। মার্কিন এ তৎপরতার ব্যাপারে রুশ সামরিক বাহিনী বলছে, যুক্তরাষ্ট্র সম্ভাব্য যুদ্ধের ক্ষেত্র নিরীক্ষণ করছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেরগেই শোইগু এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই ল্যাভরভ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস সফর করার পর এসব সতর্কবার্তা এলো। ল্যাভরভ জানান, কৃষ্ণ সাগরে ন্যাটো নৌবাহিনীর অতিরিক্ত উপস্থিতি এবং তাঁর দেশের বিরুদ্ধে ন্যাটো সামরিক জোটের আগ্রাসী অবস্থান নিয়ে তাঁরা আলোচনা করেছেন।