আফগানিস্তানে তালেবান শাসনের এক বছর

আফগানিস্তানে তালেবান শাসনের এক বছর

আফগানিস্তানে তালেবান ‘শাসনের’ এক বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০২১ সালের ১৫ আগস্টের এই দিনেই কাবুল দখল করে তালেবান যোদ্ধারা।

ক্ষমতায় বসেই ‘আগেরবারের মতো (১৯৯৬-২০০১)’ রূঢ় হবে না ঘোষণা দিলেও বাস্তবে সেই গোঁড়া শাসনই চালাচ্ছে তালেবানরা।

দেশটির বেশির ভাগ কিশোরীই গত এক বছর তাদের ক্লাস রুম দেখেনি। ক্ষমতাসীন তালেবানরা কিছুতেই তাদের স্কুলে যাওয়াকে অনুমোদন দিচ্ছে না। বিকল্প পদ্ধতিতে লেখাপড়া করার পথ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

সোদাবা নাজহ্যান্ড নামের একজন কাবুলের একটি বাড়িতে অনানুষ্ঠানিক স্কুল খুলেছেন। ছোটবোনসহ তিনি শিক্ষার্থীদের ইংরেজি, অঙ্ক ও বিজ্ঞান পড়াচ্ছেন।

এখানকার শিক্ষা শেষ করে শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিকে পড়তে পারবেন। এবিসি নিউজ। নাজহ্যান্ড বার্তা সংস্থা এপিকে বলেছেন, ‘তালেবানরা যখন শিক্ষার অধিকার হরণ করছে এবং নারীদের কাজের অধিকার বঞ্চিত করছে, আমি এসব শিক্ষার্থীর লেখাপড়া করানোর উদ্যোগ নিয়ে তালেবানদের সিদ্ধান্তের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছি।’

এক বছর তালেবানরা ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তিনি এই স্কুল চালিয়ে যাচ্ছেন। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত নারীদের লেখাপড়া নিষিদ্ধ করেছে তালেবান শাসকরা। কিন্তু তারা নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার অনুমতি দিয়েছে। এই অনুমতির কোনো তাৎপর্য থাকে না যদি তাদের মাধ্যমিকে পড়তে দেওয়া না হয়।

নাজহ্যান্ড বলেন, ‘এই ঘাটতি পূরণ করার কোনো পথ নেই। এই পরিস্থিতি অত্যন্ত বাজে ও উদ্বেগজনক।’ আন্তর্জাতিক শিশুবিষয়ক সংস্থা সেভ দি চিল্ড্রেন সাত প্রদেশের ৯ থেকে ১৭ বছর বয়সি এক হাজার ৭০০ কিশোর ও কিশোরীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে। উদ্দেশ্য ছিল লেখাপড়া নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কতটা পড়েছে তা খতিয়ে দেখা। এই সমীক্ষা চালানো হয় মে ও জুন মাসে। তা প্রকাশ্যে আনা হয়েছে গত বুধবার। সমীক্ষায় দেখা যায়, ৪৫ শতাংশ কিশোরী ও ২০ শতাংশ কিশোর স্কুলে যায় না। সমীক্ষায় আরও দেখা যায়, ২৬ শতাংশ কিশোরী ও ১৬ শতাংশ কিশোর হতাশায় ভুগছেন।

জনসাধারণের প্রতি ফের সদাচরণের নির্দেশ : ইসলামি আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ জনসাধারণের সঙ্গে সম্মানজনক ও সদাচরণ করতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি পুনঃনির্দেশ দিয়েছেন। তোলো নিউজ।

এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে রোববার প্রেসিডেন্টের বাসভবনে আলেম ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক বৈঠকে হাসান আখুন্দ এ কথা বলেন।

তিনি সবাইকে সতর্ক করে বলেন, যে জনগণের প্রতি দয়া দেখাবে না, সে সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো ধরনের দয়া পাবে না। আমাদের অহংকার বাদ দেওয়া উচিত।

এই ধারণা ত্যাগ করা উচিত, আমি গোয়েন্দা সদস্য এবং সবাইকে গ্রেফতার করতে পারি। বৈঠকে ইসলামি আমিরাতের নেতৃত্বের নির্দেশ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন আখুন্দ। তিনি আরও বলেন, আমরা স্পষ্ট বলছি, আমরা কাউকে জনসাধারণের সঙ্গে কঠোর হওয়ার অনুমতি দেব না।