যুদ্ধের ছায়াতলে জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ পরিষদের উদ্বোধন

যুদ্ধের ছায়াতলে জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ পরিষদের উদ্বোধন Photo credit: Reuters

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও নানা সমস্যার মধ্যে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের উদ্বোধন করলেন সংস্থাটির প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস। মঙ্গলবার তিনি অধিবেশন শুরুর ঘোষণা দেন।

ইতোমধ্যে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে উপস্থিত হচ্ছেন বিশ্ব নেতারা।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির শুরু হওয়ার পর গত তিন বছরে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন নিজ স্থানে ফিরে গেছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস তার উদ্বোধনী বক্তব্যে ক্রমবর্ধমান মূল্য, এ গ্রহের উষ্ণতা ও মারাত্মক দ্বন্দ্ব থেকে ‘বৈশ্বিক অসন্তোষের শীত’ আসছে বলে সতর্ক করে দেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম বড় সংঘাতের ছায়াতলে বিশ্ব নেতাদের ৭৭তম সাধারণ পরিষদের সভা আহ্বান করা হয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের সূচনা করেছে। স্নায়ুযুদ্ধের পর এমন পরিস্থিতি আর কখনও দেখা যায়নি। এবারের যুদ্ধ প্রধান শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে ফাটল সৃষ্টি করেছে।

এবারের সম্মেলনে প্রতিপাদ্য হলো, ‘একটি চরম মুহূর্ত: আন্তঃসংযুক্ত সমস্যার রূপান্তরমূলক সমাধান’। জাতিসংঘের মতে, এই প্রতিপাদ্য স্বীকৃতি দিচ্ছে বিশ্ব সংকটময় মুহূর্তে রয়েছে জটিল ও আন্তঃসংযুক্ত সংকটের কারণে।

উদ্বোধনী ভাষণে জাতিসংঘ মহাসচিব ধনী দেশগুলোর প্রতি জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানির ওপর কর আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত ও মূল্যবৃদ্ধিতে সংকটে থাকা দেশগুলোকে এই কর থেকে সংগৃহীত তহবিল ব্যবহারেরও আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ব জীবাশ্ম জ্বালানিতে আসক্ত। সময় এসেছে হস্তক্ষেপের। জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানিগুলোকে জবাবদিহি করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের আরেকটি লড়াই অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। প্রকৃতির বিরুদ্ধে আমাদের আত্মঘাতী লড়াই। সব সরকারের উচিত এটিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া।

মঙ্গলবার আরও যারা ভাষণ দেবেন তাদের মধ্যে রয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। বুধবার ভাষণ দেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

অধিবেশনে কারা থাকবেন?

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে সব সদস্য রাষ্ট্রকে প্রতিনিধি পাঠানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। কোনও রেজুলেশন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভোটাভুটিতে প্রত্যেক সদস্য রাষ্ট্র ভোট দিতে পারবে।

২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনাভাইরাস মহামারি ঘোষণার পর এই প্রথম স্বশরীরে অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত দুই বছর রাষ্ট্রপ্রধানরা রেকর্ডকৃত ভিডিও বক্তব্য পাঠাতে পেরেছিলেন।

এবারের অধিবেশনে বক্তাদের তালিকায় গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন নেতা অনুপস্থিত রয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। উভয় নেতাই অধিবেশনে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠিয়েছেন।