সুদানে জাতিগত সংঘর্ষে নিহত ১৫০

সুদানে জাতিগত সংঘর্ষে নিহত ১৫০

উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে জাতিগত সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫০ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষও রয়েছেন। সুদানের ব্লু নাইল প্রদেশে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার পর গত দুই দিনে এ প্রাণহানি ঘটে।

শুক্রবার আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সুদানে সহিংসতা ও রক্তপাত সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে এবং এরই প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ব্লু নাইল প্রদেশের রাজধানী দামাজিনের রাস্তায় নামে বহু মানুষ। এ সময় তারা এ ধরনের লড়াই-সংঘাতের নিন্দা জানিয়ে স্লোগান দেয়। বস্তুত, চলতি বছর সুদানে সংঘাতে শত শত মানুষ নিহত হয়েছেন।

সুদানের ওয়াদ আল-মাহি হাসপাতালের প্রধান আব্বাস মুসা বলেন, ‘জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষে বুধবার ও বৃহস্পতিবার নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ মোট ১৫০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া এ সহিংসতায় প্রায় ৮৬ জন আহত হয়েছেন।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, হাউসা সম্প্রদায়ের জনগণ এবং প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে জমি নিয়ে বিতর্কের পর গত সপ্তাহে ব্লু নাইল প্রদেশে সংঘর্ষ শুরু হয়। তীব্র বন্দুকযুদ্ধে এবং বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সংঘর্ষ জোরালো রূপ নিলে সেখানকার শত শত বাসিন্দারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কথা জানায়।

সুদানের রাজধানী খার্তুমের ৫০০ কিলোমিটার (৩১০ মাইল) দক্ষিণে রোজাইরেসের কাছে ওয়াদ আল-মাহি এলাকার চারপাশে এ সংঘর্ষ চলছে বলে জানায় আলজাজিরা।

এ দিকে বৃহস্পতিবার শত শত মানুষ প্রাদেশিক রাজধানী দামাজিনের রাস্তায় মিছিল করেছে। কেউ কেউ প্রদেশের গভর্নরকে বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘না, সহিংসতা নয়,’ স্লোগান দেয়।

সুদানে জাতিসঙ্ঘের সাহায্য প্রধান এডি রোই বলেছেন, ক্রমাগত এ সংঘর্ষের বিষয়ে তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। গত ১৩ অক্টোবর থেকে সর্বশেষ এই অস্থিরতা শুরু হওয়ার পর থেকে ১৭০ জন নিহত এবং আরও ৩২৭ জন আহত হয়েছেন বলে রিপোর্ট পাওয়া গেছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নিয়মিতভাবেই জাতিগত সহিংসতায় কাঁপছে নীল নদ। গত জুলাই মাসে শুরু হওয়া উপজাতি সংঘর্ষে চলতি অক্টোবরের শুরু পর্যন্ত ১৪৯ জন নিহত হয়েছেন। ইউএন অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ)-এর তথ্য অনুসারে, গত সপ্তাহে নতুন করে ছড়িয়ে পড়া সংঘর্ষে আরো ১৩ জন নিহত হয়েছেন।

নীল নদ অববাহিকা মূলত কয়েক ডজন বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠীর আবাসস্থল। ফলে তাদের মধ্যে ঘৃণাত্মক বক্তব্য এবং বর্ণবাদ কয়েক দশক ধরে প্রায়ই উপজাতীয় উত্তেজনা সৃষ্টি করে আসছে। সূত্র : আল-জাজিরা