ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে জনসন-সুনাক ৩ ঘন্টার সামিট

ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে জনসন-সুনাক ৩ ঘন্টার সামিট

এমপিদের সমর্থনে সবাইকে ছাড়িয়ে এগিয়ে আছেন সাবেক চ্যান্সেলর ঋষি সুনাক। তার প্রায় অর্ধেক সমর্থন পেয়েছেন এখন পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ অবস্থায় ক্ষমতা ভাগাভাগির রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন এই দুই নেতা।

শনিবার দিবাগত রাতে তাদের দু’জনের মধ্যে এ নিয়ে তিন ঘন্টা বিরতিহীন আলোচনা হয়েছে। কি সমঝোতা হয়েছে তাদের মধ্যে, কিভাবে ক্ষমতা ভাগাভাগি করবেন- সে বিষয়টি স্পষ্ট হওয়া যায়নি। যদি তারা কোনো স্থির সিদ্ধান্তে এসে থাকেন, কি সেই সিদ্ধান্ত তাও জানা যায়নি। তবে দল খুব আগ্রহভরে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। যদি তাদের মধ্যে সমঝোতা হয়ে থাকে তাহলে হয়তো নেতৃত্বের লড়াইটা তীব্র হবে না। ইথারে ভাসছে একটি খবর। তা হলো এমন হলে সেক্ষেত্রে কিং-মেকার হতে পারেন পেনি মর্ডন্ট।

এতে বলা হয়, দৃশ্যত দলীয় প্রধান তথা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার খায়েসে অবকাশ যাপনে থাকা বরিস জনসন দ্রুততার সঙ্গে সফর সংক্ষিপ্ত করে শনিবারই ফিরেছেন বৃটেনে। তিনি গ্যাটউইক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। বলা হচ্ছে, তিনিও শতাধিক এমপির সমর্থন আদায়ে সক্ষম হবেন। কিন্তু কনজার্ভেটিভ হোম বলছে এ পর্যন্ত তিনি সমর্থন পেয়েছেন ৫৩ জনের। অন্যদিকে ঋষি সুনাক পেয়েছেন ১২৭ জনের সমর্থন। ফলে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, দু’জনে মিলে একটি সরকার গঠন করতে চান। এ জন্যই তিন ঘন্টার ম্যারাথন বৈঠক করেন এই দু’নেতা।

ওদিকে ডেইলি মেইল অন সানডে’র এক জরিপে দেখা যাচ্ছে, কনজার্ভেটিভ পার্টির প্রধান হিসেবে যদি বরিস জনসন নির্বাচিত হন, তাহলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিরোধী লেবার দলের প্রধান কিয়ের স্টর্মারের বিরুদ্ধে ধুন্দুমার একটি নির্বাচনী লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি। কারণ, নির্বাচনে জেতার রেকর্ড আছে জনসনের। দুই নেতা যদি হাতে হাত রেখে বন্ধন তৈরি করেন তাহলে কনজার্ভেটিভ পার্টিতে যে বিভেদ, অনৈক্য দেখা দিয়েছে, তাকে তারা ঐক্যবদ্ধ করতে পারবেন। চূড়ান্ত দফায় বৃটেনকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যেতে পারবেন বলেই মনে হচ্ছে শনিবার রাতের বৈঠক দেখে।

ডেইলি মেইলের জরিপে দেখা গেছে যদি এমনই হয়, তাহলে জাতীয় নির্বাচনে কনজার্ভেটিভদের সামনে উত্তম সুযোগ আসতে পারে।

ডেইলি মেইল লিখেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তার সময়কার সাবেক চ্যান্সেলর ঋষি সুনাকের সঙ্গে বৃটিশ সময় শনিবার রাত ৮টায় সাক্ষাত করেন। সেখানে তিনি এই যুক্তি দেখাতে পারেন যে, তিনি যদি আবার ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে প্রবেশ করতে পারেন তাহলে সিনিয়র একটি অবস্থান দেয়া হবে ঋষি সুনাককে। তাতে তাদের মধ্যে যে বিভেদ আছে, তা মিটে যাবে। ঋষি সুনাককে শীর্ষ স্থানীয় একটি দায়িত্ব দেয়ার বিনিময়ে তার কাছ থেকে সুদৃঢ় আনুগত্য প্রত্যাশা করতে পারেন জনসন। জনসন দেখবেন যদি এই চাওয়া নিশ্চিত করতে পারেন, তাহলে তিনি ঋষি সুনাককে এর জন্য ছেড়ে দিতে পারেন। আরেকজন সমর্থক বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ক্যারিবিয়ান অঞ্চল থেকে ছুটি থেকে শনিবার ফিরেছেন। তিনি জাতীয় স্বার্থে নিজেদের মধ্যে জোট বা ঐক্যে জোর দিয়েছেন।

দুই নেতার মধ্যকার এই তিন ঘন্টার সামিট শেষ হয় রাত ১১টা ২০ মিনিটের সামান্য আগে। তবে কি কথা হয়েছে তাদের মধ্যে তা কেউই প্রকাশ করেননি। এখানে বলে রাখা ভাল যে, এই দুই নেতার মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ তীব্র। এই গ্রীষ্মে বরিস জনসন সরকারে থাকা অবস্থায় পদত্যাগ করেন চ্যান্সেলর ঋষি সুনাক। তাতেই ত্বরান্বিত হয় বরিস জনসনের সরকারের পতন।