রুশ নৌবহরে হামলার জবাবে অচল কিয়েভ, টিউবওয়েলগুলোর সামনে দীর্ঘ লাইন

রুশ নৌবহরে হামলার জবাবে অচল কিয়েভ, টিউবওয়েলগুলোর সামনে দীর্ঘ লাইন

কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার জবাবে আবারও ইউক্রেনের বিভিন্ন টার্গেটে মিসাইল বৃষ্টি চালিয়েছে রাশিয়া। এতে রাজধানী কিয়েভসহ দেশের প্রধান শহরগুলো বিদ্যুৎ ও পানি সংকটে ভুগছে। কিয়েভের প্রায় অর্ধেক মানুষ এখন পানিহীন এবং তিন লাখের বেশি বাড়ি বিদ্যুৎহীন। সোমবারের হামলায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পানি সরবরাহ লাইনকে টার্গেট করা হয়। ইউক্রেন জানিয়েছে, রাশিয়ার এ হামলায় কেউ মারা যায়নি, তবে ১৩ জন আহত হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

খবরে জানানো হয়, নৌবহরে হামলার জন্যই যে ইউক্রেনকে এ শাস্তি দেয়া হচ্ছে তা জানাতে কোনো রাখডাক রাখছে না মস্কো। সোমবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, কৃষ্ণ সাগরের ওই হামলার আংশিক প্রতিক্রিয়া ছিল এটি। যদিও ইউক্রেনের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, রাশিয়ার ছোড়া ৫৫ মিসাইলের ৪৫টিই ভূপাতিত করেছে তারা। কিন্তু দেশজুড়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংসের বিষয়টিও নিজ নিজ টেলিগ্রাম চ্যানেলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের কর্মকর্তারা।

ইউক্রেন এখন রুশ মিসাইল হামলার ভিডিও প্রচার নিষিদ্ধ করেছে। দেশটি বলছে, এসব ভিডিও দেখে রাশিয়া নিশ্চিত হতে পারে যে তাদের কোন হামলা সফল হয়েছে এবং কোনটি হয়নি।

ফলে তাদের পরবর্তী হামলা আরও নিখুঁত হতে পারে। যদিও সোমবার আবারও বড় মাপের হামলাই চালিয়েছে মস্কো। তার প্রভাব এখন ইউক্রেনের দিকে তাকালেই দেখা যাচ্ছে। শহরগুলোতে বিদ্যুৎ অল্প সময়ের জন্য থাকছে। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি নাগরিকদের বিদ্যুৎ ব্যবহার কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন।

রুশ হামলার পর অন্ধকারে ডুবে যায় কিয়েভ। বন্ধ হয়ে যায় সড়ক বাতিও। শহর জুড়ে দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। বাসিন্দাদের বিভিন্ন টিউবওয়েল ও পাম্প থেকে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। হামলার পরপরই কিয়েভের ৮০ শতাংশ মানুষই পানিহীন হয়ে পড়েছিল বলে জানিয়েছে বিবিসি। জেলেনস্কি তার সন্ধ্যার ভাষণে বলেন, দ্রুতই পরিবারগুলিকে পানি সরবরাহ করা হবে। তবে এসব হামলা ইউক্রেনীয়দের বাঁচার ইচ্ছা ধ্বংস করতে পারবে না বলেও জানান তিনি।

রাজধানী ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য এলাকাগুলির মধ্যে রয়েছে লিভিভ, ডিনিপ্রপেট্রোভস্ক, খারকিভ এবং জাপোরিশিয়া। সামগ্রিকভাবে ১৮টি স্থাপনায় আঘাত হেনেছে রুশ মিসাইল। এরমধ্যে প্রায় সবগুলোই বিদ্যুৎ ও জ্বালানী অবকাঠামো। মিসাইলের পাশাপাশি ড্রোনও ব্যবহার করা হয়েছে হামলায়। ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা রাশিয়ার একটি মিসাইল ঠেকালে সেটি মলদোভার একটি শহরে আঘাত হানে। এতে অবকাঠামোগত ক্ষতি হলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।