প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তনের ঘোষণা দিল জাপান

প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তনের ঘোষণা দিল জাপান

চীন ও উত্তর কোরিয়া থেকে আঞ্চলিক হুমকি রয়েছে উল্লেখ করে, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা শুক্রবার দেশটির প্রতিরক্ষাকৌশলে ব্যাপক পরিবর্তনের কথা জানিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে, প্রতিরক্ষা ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি এবং দূরপাল্লার ও আগে ভাগেই হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম অস্ত্র কেনার পরিকল্পনা।

টোকিওতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে কিশিদা বলেন, আশপাশে ‘নিরাপত্তা পরিবেশ’ নিয়ে জাপান বাড়তি অস্থিতিশীলতা অনুভব করছে। এমন পরিস্থিতিতে তার সরকার বিবেচনা করেছে যে জাপানের বর্তমান আত্মরক্ষা বাহিনীগুলো (সেলফ ডিফেন্স ফোর্স) প্রতিপক্ষের সক্ষমতা ও লড়াইয়ের নতুন পদ্ধতি থেকে সৃষ্ট হুমকি মোকাবেলা করতে পারবে কিনা।

তিনি জানান, বাস্তবমুখী মূল্যায়ন পরিচালনার পর, এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া গেছে যে জাপানের প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলো হুমকি মোকাবেলায় পর্যাপ্তভাবে সক্ষম নয়।

প্রধানমন্ত্রী কিশিদা জানান, নতুন কৌশলের আওতায়, আগামী পাঁচ বছরে সামরিক বাহিনীকে উন্নত করতে ৩২ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি ব্যয়ের একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। এই ব্যয়- ২০২৭ সাল নাগাদ দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ শতাংশে দাঁড়াবে।

তথ্য অনুসারে, পরিকল্পনার আওতায় শুধুমাত্র জাপানে তৈরি অস্ত্রকে উন্নত করা হবে না; এর মাধ্যমে অন্তত ৪০০টি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি দূরপাল্লার টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও সংগ্রহ করা হবে।

শুক্রবার ঘোষিত প্রতিরক্ষা কৌশলে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণকেও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরালো করার একটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এর ফলে এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যে চীনের মতো অন্যান্য আঞ্চলিক শক্তিগুলোও, একই ধরনের একপাক্ষিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।

এদিকে, জাপানের জনমত জরিপগুলো বলছে, বর্ধিত সামরিক ব্যয়ের জন্য জনসমর্থন রয়েছে। সামরিক শক্তি বৃদ্ধির এমন পদক্ষেপ জাপানে বিতর্কের জন্ম দিতে পারে। কেন না, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী জাপানের সংবিধান, দেশটির জাতীয় বাহিনীগুলোকে শুধুমাত্র প্রতিরক্ষামূলক ভূমিকা পালনের মধ্যে সীমিত করে রেখেছে।

তবে, কিশিদা তার বক্তব্যে আশ্বস্ত করেন- নতুন এই কৌশল ‘জাপানের সংবিধান, আন্তর্জাতিক আইন ও দেশীয় আইনের আওতার মধ্যেই রয়েছে’ এবং এটি কেবল প্রতিরক্ষা-ভিত্তিক নীতি অনুসরণ করে।