ইতালি উপকূলে আবার অভিবাসী মৃত্যুর মিছিল

ইতালি উপকূলে আবার অভিবাসী মৃত্যুর মিছিল

ইতালি উপকূলে আবার মৃত্যুর মিছিল। এবার সেখানে বোটডুবে মারা গেছেন কমপক্ষে ৫৯ জন অভিবাসী। এর মধ্যে ১২টি শিশু। ধারণা করা হচ্ছে নিখোঁজ রয়েছেন কয়েক ডজন মানুষ। ইতালির দক্ষিণে সমুদ্র উত্তাল হয়ে পড়লে ওই বোটটি ডুবে যায়। এ সময় স্রোতের ধাক্কায় তা ভেঙে যায়। রোববার বোটটি ক্রোটোনের কাছে ভূভাগে পৌঁছার চেষ্টা করছিল। তার আগেই সব তছনছ হয়ে যায়। বোটটিতে যেসব দেশের অভিবাসী ছিলেন বলে এখন পর্যন্ত জানা গেছে, তা হলো- পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সোমালিয়া ও ইরান। ইতালির একজন কর্মকর্তা বলেছেন, নিহতদের মধ্যে এক মাস বয়সী একটি শিশুও আছে।

 

ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তিও পিয়ানটেডোসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেছেন, এখনও কমপক্ষে ৩০ জন মানুষ নিখোঁজ থাকতে পারেন। নিহতদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে ক্যালাব্রিয়া অঞ্চলের অবকাশযাপন এলাকার সমুদ্রভাগে। কোস্টগার্ডরা বলেছেন, তারা জীবিত উদ্ধার করেছেন প্রায় ৮০ জনকে। এর মধ্যে কয়েকজন আছেন, যারা বোট ডুবে যাওয়ার পর সাঁতরে তীরে আসতে সক্ষম হয়েছেন।

তুরস্ক থেকে এসব অভিবাসীকে নিয়ে বোটটি যাত্রা করেছিল বেশ কয়েকদিন আগে। তবে এতে কি পরিমাণ অভিবাসী ছিলেন তার প্রকৃত সংখ্যা জানা যায়নি। উদ্ধারকর্মীরা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, কমপক্ষে ২০০ মানুষ বহন করছিল ওই নৌযানটি। যদি তা-ই হয়, তাহলে এখন পর্যন্ত ৬০ জন মানুষের খবর নেই। ইতালির প্রেসিডেন্ট বলেছেন, অভিবাসীদের অনেকেই অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছিলেন।

এসব রিপোর্ট উদ্ধৃত করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বলেছেন, নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে দুই ডজন পাকিস্তানি আছেন। এ খবরকে তিনি গভীর উদ্বেগের এবং হতাশার বলে বর্ণনা করেছেন। যত দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে তিনি পাকিস্তানি কূটনীতিকদের নির্দেশনা দিয়েছেন।

ওদিকে বলা হচ্ছে, নৌযানটি ঝড়ো আবহাওয়ায় পাথরের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ভেঙে যায়। ফলে তা টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। এ জন্য সমুদ্রের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে ধ্বংস হওয়া বোটের কাঠগুলো টুকরো টুকরো হয়ে তীরে ভেসে এসেছে। জীবিতদের দেখা গেছে কম্বলে জড়িয়ে বাঁচার চেষ্টা করছেন। তাদের সহায়তা দিচ্ছেন রেডক্রসের কর্মীরা। অনেককে নেয়া হয়েছে হাসপাতালে। কাস্টমস পুলিশ বলেছে, অভিবাসী পাচারের অভিযোগে একজন জীবিত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অভিবাসীদের ঢেউ ইতালিতে কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গত বছর নির্বাচিত হন প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। তিনি এ ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন। মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন পাচারকারীদের।