রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ব্রাজিলে স্বাগত জানালেন প্রেসিডেন্ট লুলা

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ব্রাজিলে স্বাগত জানালেন প্রেসিডেন্ট লুলা

ব্রাজিল সফরে গিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। দেশটির রাজধানী ব্রাসিলিয়াতে প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভার সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্রদের মধ্যে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে প্রথম থেকেই নিরপেক্ষ অবস্থানে ছিল ব্রাজিল। তবে লুলা দা সিলভা ক্ষমতায় আসার পর ইউক্রেনকে একাধিকবার আপোষের আহ্বান জানিয়েছেন। এরমধ্যে রাশিয়ার পরম মিত্র চীনে দীর্ঘ সফরে যান লুলা। সেখান থেকে ফিরেই রাজধানীতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানালেন তিনি। সব মিলিয়ে ব্রাজিল আর নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পাড়ছে না এবং ক্রমশ রাশিয়ার দিকে হেলে পড়ছে বলে আশঙ্কা জন্মেছে পশ্চিমা দেশগুলোর মনে।

আল-জাজিরার খবরে জানানো হয়েছে, গত সোমবার ব্রাসিলিয়ায় পৌঁছান ল্যাভরভ। সেখানে তিনি দুই দেশের মধ্যেকার বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া গুরুত্ব পায় ইউক্রেন যুদ্ধও।

সম্প্রতি চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরকালে লুলা ইউক্রেন যুদ্ধকে উৎসাহিত করার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেন এবং পশ্চিমাদের সমালোচনা করেন। তিনি যুদ্ধে উসকানি দেয়া থামিয়ে শান্তি আলোচনা শুরুর জন্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের প্রতি আহ্বান জানান।

সরাসরি বৈঠকে এ জন্য লুলাকে ধন্যবাদ জানান। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেছেন, ব্রাজিল বাস্তবতার দিকে না তাকিয়ে রুশ-চীনা প্রচারণাকেই তোতা পাখির মতো আওড়িয়ে যাচ্ছে। তবে মার্কিন সমালোচনা পাত্তা না দিয়ে সম্পর্ক বৃদ্ধিতেই মনোযোগ দিচ্ছে রাশিয়া ও ব্রাজিল। ব্রাজিলের সাবেক সরকারও রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় সমর্থন দেয়নি। ইউক্রেন বারবার অস্ত্র চাইলেও সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটি। চীন সফরে যাওয়ার আগে লুলা যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতার জন্যে কয়েকটি দেশ নিয়ে একটি গ্রুপ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

প্রেসিডেন্ট লুলা ছাড়াও ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাওরো ভিয়েরার সঙ্গেও বৈঠক করেছেন ল্যাভরভ। বৈঠকের পর তিনি বলেন, ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে স্পষ্ট ধারনার জন্যে আমরা ব্রাজিলিয়ান বন্ধুদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংঘাত নিরসনে আগ্রহী। ব্রাজিলে আসার মধ্যদিয়ে ল্যাভরভ তার সপ্তাহব্যাপী লাতিন আমেরিকা সফর শুরু করেছেন। এর পর তার ভেনিজুয়েলা, নিকারাগুয়া ও কিউবা যাওয়ার কথা রয়েছে। ইউক্রেনে অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকলেও এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার হচ্ছে রাশিয়ার। লাতিন আমেরিকায় বেশ কয়েকটি দেশে বামপন্থী সরকার ক্ষমতায়। তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বৈরি সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে।