মনিপুরে সহিংসতায় নিহত কমপক্ষে ৫৪, সর্বদলীয় মিটিং মুখ্যমন্ত্রীর

মনিপুরে সহিংসতায় নিহত কমপক্ষে ৫৪, সর্বদলীয় মিটিং মুখ্যমন্ত্রীর

কয়েকদিনে মনিপুরে সহিংসতায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫৪ জন। পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। লুট করা বন্দুক নিয়ে রাস্তায় ঘোরাফিরা করতে দেখা গেছে বেসামরিক লোকজনকে। এমন ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কয়েকদিনে আটটি পুলিশ স্টেশন থেকে এসব অস্ত্র লুট করেছে তারা। লুট করা অস্ত্র সমর্পণের অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ। মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় ড্রোন ব্যবহার করে নজরদারি জোরালো করেছে সেনাবাহিনী। পাহাড়ি উপত্যকাভিত্তিক বিদ্রোহীরা ঘন বনের ভিতরে আত্মগোপন করেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শনিবার সর্বদলীয় বৈঠক করেছেন মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।
ইম্ফল উপত্যকায় বসবাসকারী মৈত্রেয়দের বেশ কিছু দাবিকে কেন্দ্র করে এই সহিংসতা।

মৈত্রেয়রা মুলত সাধারণ ক্যাটেগরিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের। তারা শিডিউলড ট্রাইবসের (এসটি) অধীনে তাদেরকে অন্তভুর্ক্ত করা হোক এমন দাবি করে । কিন্তু এর বিরোধী কুকি উপজাতি সম্প্রদায়। কুকিরা হলেন খ্রিস্টান। তারা চান না মৈত্রেয়দেরকে এসটি হিসেবে গণ্য করো হোক। যদি মৈত্রেয়দেরকে এসটি হিসেবে গণ্য করা হয় তাহলে তারা সরকারের কাছ থেকে ভাতা বা অন্যান্য সুবিধা পাবে। এতে রাজ্য সরকারের ওপর চাপ পড়বে। এছাড়া সীমান্ত অতিক্রম করে মিয়ানমার থেকে মনিপুরে যাওয়া অভিবাসীদের নিয়ে সমস্যা তো আছেই। এসব অবৈধ অভিবাসী উপজাতি হিসেবে বসবাস করছেন পাহাড়ি এলাকায়। মৈত্রেয়দের অভিযোগ এসব অভিবাসী রাজ্যের জনসংখ্যাতত্ত্বের জন্য হুমকি।

এ অবস্থায় উভয় পক্ষ মুখোমুখি সংঘাতে লিপ্ত হয়। ভারতীয় বিভিন্ন মিডিয়ার খবরে বলা হচ্ছে, নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫৪ জন। ডাক্তাররা বলছেন, বহু মৃতদেহ তারা গ্রহণ করছেন। এ অবস্থায় শনিবার সর্বদলীয় মিটিং করেন মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং। সেখানে তিনি এবং সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওকরাম ইবোবি সিং একমত হন যে, সব দলকে, সবাইকে দলীয় অবস্থানের বাইরে এসে এই উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে। মনিপুরজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে ১৪ কোম্পানি নিরাপত্তা বাহিনী। কেন্দ্রীয় সরকার আরও ২০ কোম্পানি পাঠিয়েছে।

সহিংস এলাকা থেকে প্রায় ২০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে আছেন পাহাড়ে বসবাসকারী মৈত্রেয় এবং ইম্ফল উপত্যকায় বসবাসকারী কুকিরা। জিম্মি দশায় আছেন যারা তাদেরকে নিরাপদে সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য মৈত্রেয় এবং কুকিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নাগরিক সমাজ।