চরম আবহাওয়ায় ইউরোপে ২ লাখ লোকের মৃত্যু

চরম আবহাওয়ায় ইউরোপে ২ লাখ লোকের মৃত্যু

ইউরোপে চরম আবহাওয়ার কারণে ১৯৮০ সালের পর থেকে প্রায় ১ লাক ৯৫ হাজার লোক মারা গেছে এবং ৫৬০ বিলিয়ন ইউরোরও বেশি অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। ইউরোপীয় পরিবেশ সংস্থা (ইইএ) বুধবার এ কথা জানায়।

ইইএ তার প্রতিবেদনে বলেছে, ‘১৯৮০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বন্যা, ঝড়, তাপ ও শৈত্যপ্রবাহ, দাবানল এবং ভূমিধসের কারণে প্রায় ১ লাখ ৯৫ হাজার লোকের প্রাণহানি ঘটেছে।’

ইইএ বলেছে, ৫৬০ বিলিয়ন ইউরো (৬০৫ বিলিয়ন ডলার) ক্ষতির মধ্যে শুধুমাত্র ১৭০ বিলিয়ন বা ৩০ শতাংশ বীমা করা হয়েছে। চরম আবহাওয়ার প্রভাবের উপর সাম্প্রতিক তথ্য সংগ্রহ করে ইইএ একটি নতুন অনলাইন পোর্টাল চালু করেছে।

ইইএ বিশেষজ্ঞ আলেকসান্দ্রা কাজমিয়ারজাক এএফপিকে বলেছেন, ‘আরো ক্ষতি রোধ করতে, আমাদের জরুরিভাবে আবহাওয়ার চরম পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়া থেকে সরে আসতে হবে। এ জন্য তাদের সক্রিয় প্রস্তুতি নিতে হবে।’

সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, তাপপ্রবাহের কারণে এদের ৮১ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৫ শতাংশ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

ইইএ বলেছে, ইউরোপকে তার বয়স্ক জনসংখ্যা রক্ষা করার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে, বিশেষ করে প্রবীণরা চরম তাপের প্রতি সংবেদনশীল।

সংস্থাটি বলেছে, ‘বেশিরভাগ জাতীয় অভিযোজন নীতি এবং স্বাস্থ্য কৌশলগুলো কার্ডিওভাসকুলার এবং শ্বাসযন্ত্রের সিস্টেমে তাপের প্রভাবগুলোকে গুরুত্ব দেয়, তবে অর্ধেকেরও কম ডিহাইড্রেশন বা হিট স্ট্রোকের মতো তাপের প্রত্যক্ষ প্রভাবগুলোকে কভার করে।’

২০২২ সালের গ্রীষ্মে বারবার তাপপ্রবাহের কারণে ইউরোপে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মৃত্যু দেখা গেছে, তবে ২০২২ সালের মৃত্যুর তথ্য বুধবার প্রকাশিত ডেটাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

ইইএ বলেছে, ২০১৬-২০১৯ সালের মাসিক গড় তুলনায় ২০২২ সালের জুলাই মাসে ৫৩ হাজারের বেশি মৃত্যু হয়েছে, যা ১৬ শতাংশ বেশি। যদিও এই সব মৃত্যু সরাসরি তাপের জন্য দায়ী নয়।

জুন, জুলাই এবং আগস্ট মাসে প্রচণ্ড গরমের কারণে স্পেনে ৪ হাজার ৬০০ জনের বেশি লোকের মৃত্যুর রেকর্ড করা হয়েছে।

ইইএ বলেছে, মানুষের দ্বারা সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন ২০২২ সালে খরার ঝুঁকি পাঁচ বা ছয়গুণ বাড়িয়েছে, এ বছরে সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় দাবানল দ্বিগুণ বেশি অঞ্চলকে ধ্বংস করেছে। খরার জন্য আমাদের আরো চরম মূল্য দিতে হতে পারে।

শতাব্দীর শেষ প্রান্তে যদি এই গ্রহটিতে তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায় তাহলে অর্থনৈতিক ক্ষতি প্রতি বছর বর্তমান নয় বিলিয়ন ইউরো থেকে বেড়ে শতাব্দীর শেষে ২৫ বিলিয়ন ইউরো হতে পারে।