বিলাসবহুল জীবনযাপনের নিরিখে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরের তকমা পেলো সিঙ্গাপুর

বিলাসবহুল জীবনযাপনের নিরিখে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরের তকমা পেলো সিঙ্গাপুর

প্রথমবার বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর হিসাবে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠে এসেছে সিঙ্গাপুর। কারণ এটি ধনীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। সুইস সম্পদ ব্যবস্থাপক জুলিয়াস বেয়ার গ্রুপ লিমিটেডের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, সিঙ্গাপুর ২০২২ সালে পঞ্চম স্থানে ছিলো। কিন্তু বর্তমানে এটি সাংহাই এবং হংকংকে পিছনে ফেলে তালিকায় ওপরে উঠে এসেছে। মহামারী চলাকালীন সীমানা কিছুদিন বন্ধ রাখার পর পুনরায় তা পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হয়। যার জেরে সিঙ্গাপুরের স্থানীয় বাজারে ক্রমবর্ধমান দাম প্রতিফলিত।

রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালের শেষ নাগাদ সিঙ্গাপুর ভূখণ্ডে আনুমানিক ১৫০০ টি পারিবারিক অফিস বেড়েছে যা আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। গাড়ির দামের জন্যও এটি বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর। সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-"উচ্চ জীবনযাত্রার মান এবং স্থানীয় অবকাঠামোর চাহিদা মানে এই নয় যে এখানে জীবন সস্তা। আবাসিক সম্পত্তির উচ্চ চাহিদা রয়েছে। ট্যাক্সযুক্ত গাড়ি এবং অপরিহার্য স্বাস্থ্য বীমা যথাক্রমে বিশ্বব্যাপী গড় থেকে ১৩৩% এবং ১০৯% বেশি ব্যয়বহুল।

আবাসিক সম্পত্তি, গাড়ি, বিজনেস ক্লাস ফ্লাইট, বিজনেস স্কুল, ডিগস্টেশন ডিনার এবং অন্যান্য বিলাসিতা বিশ্লেষণ করে জুলিয়াস বেয়ারের লাইফস্টাইল ইনডেক্স বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ২৫টি শহরের তালিকা তৈরী করেছে। এশিয়া টানা চতুর্থ বছরের জন্য বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য সবচেয়ে ব্যয়বহুল হিসেবে রয়ে গেছে। শক্তিশালী ডলার এবং মহামারী থেকে প্রত্যাবর্তনের কারণে আরেকটি বড় লাভজনক শহর হয়ে উঠেছে নিউ ইয়র্ক, এটি এগারোতম থেকে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে । লন্ডন দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ স্থানে নেমে এসেছে।

জুলিয়াস বেয়ারের মতে ব্রেক্সিট এবং পরবর্তী অশান্তি যুক্তরাজ্যের সুনামকে ক্ষুণ্ন করে চলেছে এবং লন্ডন এখন দুবাই এবং সিঙ্গাপুরের মতো ক্রমবর্ধমান আর্থিক কেন্দ্রগুলির থেকে শক্তিশালী প্রতিযোগিতার মুখোমুখি। প্রতিবেদনটি শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকা হল সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যের অঞ্চল, যেখানে ইউরোপীয় শহরগুলি র‍্যাঙ্কিংয়ে নেমে গেছে। জুলিয়াস বেয়ারের মতে, দুবাই প্রথমবারের মতো শীর্ষ দশে উঠে এসে সপ্তম স্থান দখল করেছে। জুরিখ দখল করেছে ১৪ তম স্থান। এমিরেট এই বছরের সূচকে একটি "স্টার পারফর্মার" এবং বিপুল সংখ্যক ধনী ব্যক্তিদের চাহিদাকে প্রভাবিত করেছে। মহামারী বিধিনিষেধ প্রত্যাহার হবার পর ভ্রমণ ও বিনোদনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বেড়েছে।

ওয়াইনের মতো বিলাসবহুল পানীয় এবং হুইস্কির দাম বিশ্বব্যাপী যথাক্রমে ১৭.২% এবং ১৬.২ % বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষ ধীরে ধীরে সামাজিক জীবনে ফিরে আসায় ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। অন্যান্য বড় লাভকারীদের মধ্যে হোটেল স্যুট এবং বিজনেস ক্লাস ফ্লাইট অন্তর্ভুক্ত ছিল। যদিও কিছু ব্যতিক্রম ছিল। সাইকেলের দাম, যা মহামারীর সময় "অত্যন্ত ব্যয়বহুল" হয়ে উঠেছিল এখন সেটির চাহিদা ১.৮% কমেছে।

সূত্র : বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড