গাজার হাসপাতালে জ্বালানি শেষ হবে ২৪ ঘণ্টায়: জাতিসংঘ

গাজার হাসপাতালে জ্বালানি শেষ হবে ২৪ ঘণ্টায়: জাতিসংঘ

জাতিসংঘের সতর্কতা। তারা বলেছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজার সব হাসপাতালের মজুদ জ্বালানি শেষ হয়ে যাবে। এতে হাসপাতালগুলোতে হাজার হাজার রোগীর জীবন বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। মানুষের দুর্দশার আরও অবনতি হয়েছে। খাদ্য, পানি, বিদ্যুৎ ও ওষুধের সরবরাহ নেই। মানুষ মরতে বসেছে।

সেভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, গাজায় কোনোই নিরাপদ স্থান নেই। সেভ দ্য চিলড্রেনের মানবাধিকার বিষয়ক পরিচালক গাব্রিয়েলা ওয়াইজম্যান পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ তা বর্ণনা করতে গিয়ে এ কথা বলেছেন। তার সংগঠনের অনেক স্টাফ বাড়িঘর ছেড়ে গেছেন। গাজার ভিতরে অবস্থান করে আর্ত মানুষদের সামান্য সাহায্য করারও সুযোগ নেই। এর ওপর আরও হামলা হলে তাতে অধিবাসীদের চরম পরিণতি ভোগ করতে হবে।

ওদিকে ইসরাইলি ডিফেন্স ফোর্সেসের (আইডিএফ) আন্তর্জাতিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল জোনাথন কনরিকাস বলেন, গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে ৫ লাখ মানুষ সরে গেছে।

বাকি ৭ লাখের মতো মানুষ এখনও অবস্থান করছেন সেখানে। কনরিকাসের অভিযোগ, দক্ষিণে সরে যেতে এসব মানুষকে বাধা দিচ্ছে হামাস। তিনি বলেন, আইডিএফ উদ্ধারের দুটি নিরাপদ রুট অনুমোদন দিয়েছে। শুক্রবার বাড়িঘর ছেড়ে দক্ষিণে ছুটে চলা সাধারণ মানুষের গাড়িবহরে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৭০ জনকে হত্যার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইডিএফ সক্রিয়ভাবে বেসামরিক মানুষকে টার্গেট করে না।

ওদিকে ইসরাইলের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম, বর্ধিত সময় শেষ হয়ে গেছে। সীমান্তে সেনাবাহিনী প্রস্তুত। কিন্তু গাজার দক্ষিণের সবচেয়ে বড় শহর খান ইউনূসে এখনও অবস্থান করছেন হাজার হাজার মানুষ। এই অবস্থায় যদি ইসরাইল সেখানে হামলা চালায় বা অভিযান চালায় তাহলে এসব মানুষকে বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়বে। ওই শহর থেকে মোহাম্মদ আবু রেজাল বলেছেন, এসব মানুষের বেশির ভাগেরই যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। যাদের আত্মীয়স্বজন আছেন, তারা তাদের সঙ্গে অবস্থান করছেন। অন্যরা স্কুলে অবস্থান নিয়েছেন। কিন্তু সেখানে মানুষে গাদাগাদি। অবস্থা নাজুক।

হাজার হাজার মানুষ এখনও রাস্তায় অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, রোববার দিবাগত রাতে ও সোমবার সকালে ওই শহরে ও এর চারপাশে বিমান থেকে কমপক্ষে ১০টি হামলা চালানো হয়েছে। এসব বোমা আঘাত করেছে আবাসিক এলাকা ও পূর্বদিকে কৃষি জমিতে। একটি বিমান হামলা হয়েছে হাই আল-আমাল এলাকায়। সেখানে বহু বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। তা সত্ত্বে অব্যাহতভাবে ইসরাইলের নজরদারি বিমানের শব্দ শোনা যাচ্ছে। আটকে পড়া এসব মানুষের জীবন বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এক টুকরো রুটি পাওয়ার জন্য লাইন দীর্ঘ হচ্ছে। দুপুরে দেয়া হবে কয়েক পিস করে রুটি। তা পাওয়ার জন্য সকাল ৬টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে যান দুর্দশাগ্রস্ত এসব মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে অনেক মানুষের গাজার উত্তরাঞ্চলে তাদের ঘরে ফেরা প্রয়োজন। কিন্তু সেখানে ইসরাইল যেকোনো সময় স্থল হামলা চালাতে পারে।