৮০ ভাগ ইসরাইলি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে

৮০ ভাগ ইসরাইলি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে

ইসাইলিরা ক্ষেপেছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ ইসরাইলি মনে করে, ৭ অক্টোবরের গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গ্রুপ হামাসের হামলার জন্য নেতানিয়াহুর উচিত প্রকাশ্যে দায় স্বীকার করা। মারিভ পত্রিকার এক জনমত জরিপে এই তথ্য ওঠে এসেছে।

ইতোমধ্যেই ইসরাইফ ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) এবং ইসরাইলি নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেত ইতোমধ্যেই ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে। এমনকি দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীও দায় স্বীকার করেছেন।

জরিপে দেখা যায়, ৮০ ভাগ ইসরাইলি মনে করে যে নেতানিয়াহুরও উচিত দায় স্বীকার করা। গত বছরের নির্বাচনে নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টিকে সমর্থন করেছে, এমন ৬৯ ভাগ লোকও এদের মধ্যে রয়েছে। মাত্র ৮ ভাগ লোক এর দরকার নেই বলে মনে করে।

প্রধানমন্ত্রী হতে যে বেশি উপযুক্ত- এমন প্রশ্নের জবাবে ৪৯ ভাগ লোক ন্যাশনাল ইউনিটি পার্টির নেতা বেনি গানজকে বাছাই করেছেন। নেতানিয়াহুকে পছন্দ করেছে মাত্র ২৮ ভাগ লোক। বাকিরা কোনো মতামত জানায়নি।

গাজা যুদ্ধের ব্যাপারে ৬৫ ভাগ ইসরাইলি স্থল হামলার পক্ষে মত দিয়েছে, মাত্র ২১ ভাগ এর বিপক্ষে অবস্থান জানিয়েছে।

এছাড়া ৫১ ভাগ ইসরাইলি উত্তর ফ্রন্টে ব্যাপক আকারে অভিযান চালানোকে সমর্থন করেছে। ৩০ ভাগ চায় সীমিত অভিযান। উল্লেখ্য, লেবানন থেকে হামাস ও হিজবুল্লাহ ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে ক্রমবর্ধমান হারে হামলা চালাচ্ছে।

আজ নির্বাচন হলে কাকে ভোট দেবেন, এমন প্রশ্নের জবাবেই বর্তমান কোয়ালিশন সরকারের বিরুদ্ধে জবাব পাওয়া গেছে। মাত্র ৪৩ ভাগ জানিয়েছে, তারা বর্তমান জোটকে ভোট দেবে। আর ৬৪ ভাগ বলেছে, তারা গানজকে ভোট দেবে। ফলে আজ নির্বাচন হলে তাদের আসন সংখ্যা ১২ থেকে বেড়ে হতে পারে ৪০।

গত ১৮ ও ১৯ অক্টোবর লাজার ইনস্টিটিউট এই জরিপ চালায়। এতে ৫১০ জন অংশ নেয়।

এবার গাজার অর্থোডক্স চার্চে ইসরাইলি হামলা
এবার গাজার একটি অর্থোডক্স চার্চে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এতে অন্তত আটজন নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরো কয়েকজন। হতাহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে।

ফিলিস্তিনি ওয়াফা সংবাদ সংস্থা জানায়, গাজার আল-জয়তুন এলাকার সেন্ট পরফিরাস চার্চে বৃহস্পতিবার হামলা চালানো হয়েছে।

ওয়াফা জানায়, বোমা হামলায় কাউন্সিল অব চার্চ স্টেওয়ার্ডসের ভবনটি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। এখানে বেশ কয়েকটি ফিলিস্তিনি পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল। খ্রিস্টান ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের সদস্যই ছিল তারা। তারা অব্যাহত ইসরাইলি বোমা হামলার মুখে সেখানে গিয়েছিল।

আল জাজিরা আরাবিকের একটি ভিডিও ক্লিকে দেখা যায়, বোমায় আহত দু্জন অ্যাম্বুলেন্সে করে গাজার একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে যাচ্ছেন।

গাজার পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে
জাতিসঙ্ঘ স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বুধবার সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সেখানের একটি হাসপাতালে ভয়াবহ হামলায় কয়েক শ’ মানুষ নিহত হওয়ার পর তিনি এমন বার্তা দিলেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম ঘাব্রায়েসাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় বলেন, ‘গাজার পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। অবিলম্বে আমাদের সকল পক্ষের সহিংসতা বন্ধ করা প্রয়োজন।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতি মুহূর্ত আমরা ওষুধসহ চিকিৎসা সহায়তা পাওয়ার অপেক্ষা করি আর এভাবেই প্রাণ হারাই।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন, ‘জীবন রক্ষাকারী বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ শুরু করার জন্য অবিলম্বে আমাদের সেখানে যাওয়া প্রয়োজন।’

সূত্র : আল জাজিরা, এএফপি এবং অন্যান্য