রাশিয়াকে সামরিক সহায়তা দেয়ায় ১৫০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

রাশিয়াকে সামরিক সহায়তা দেয়ায় ১৫০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

রাশিয়ার সামরিক শিল্পে এবং ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে যারা বিভিন্নভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। চীন, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত সহ কয়েকটি দেশের দেড় শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়।

বলা হয়েছে, ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে রাশিয়া অস্ত্র সংগ্রহের যে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে, তাতে বাধা দিতেই এই নিষেধাজ্ঞা। মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে বলা হয়, রাশিয়ার যুদ্ধকে তৃতীয় যেসব দেশ সহায়তা করছে তাদের বিরুদ্ধে জি৭ দেশগুলোর নেতাদের অবস্থানকে সমর্থন করে এই নিষেধাজ্ঞা। এতে টার্গেট করা হয়েছে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর অস্ত্র কেনাকাটা বিষয়ক নেটওয়ার্ক, যারা রাশিয়াকে বিভিন্ন অস্ত্র, সরঞ্জাম সংগ্রহে সহায়তা করে তাদেরটে টার্গেট করে এই নিষেধাজ্ঞা।

রাশিয়ার অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেছেন, ক্রেমলিনকে পরিণত করা হয়েছে রাশিয়ার যুদ্ধ সময়ের অর্থনীতি হিসেবে। কিন্তু শুধু দেশের ভিতরকার ‘প্রোডাকশন’কে ব্যবহার করে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের যুদ্ধ টিকে থাকতে পারে না। একই সঙ্গে কমপক্ষে ১০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নতুন এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে রাশিয়ার বিভিন্ন শিল্পে পণ্য ও সেবা সরবরাহের মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধে দেশটির শক্তিমত্তা বাড়ানো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো। তাদের মধ্যে দেড় শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়।

এছাড়াও শতাধিক ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যুক্তরাষ্ট্রের এ নিষেধাজ্ঞা এমন সময় ঘোষণা করা হলো, যখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মার্কিন কংগ্রেস সফর করেছেন। একইসঙ্গে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে ইউক্রেনে আরও সামরিক সহায়তা পাঠানোর লক্ষ্যে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে হোয়াইট হাউস।

বার্তা সংস্থা এপি বলছে, তুরস্ক ও আরব আমিরাতের একাধিক প্রতিষ্ঠানও নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। এছাড়া সুইজারল্যান্ডভিত্তিক ইলেকট্রনিক পণ্য রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠান ‘থামেস্টোন’ ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক ‘মাইক্রো ইলেকট্রনিকস টেকনোলজিসের’ ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা পাওয়া একটি নেটওয়ার্ক চীন, রাশিয়া, হংকং ও পাকিস্তানভিত্তিক। এই নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা চীনের তৈরি অস্ত্র ও প্রযুক্তি রাশিয়ায় সরবরাহ করেছে। নেটওয়ার্কটির আওতায় রয়েছেন চীনের নাগরিক হু জিয়াওজান ও চীনভিত্তিক বেসরকারি প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘জার্ভিস এইটকে কোম্পানি’।

খবরে বলা হয়, স্যাটেলাইট থেকে ছবি ধারণকারী চীনা প্রতিষ্ঠান ‘বেইজিং ইউনজে টেকনোলজি কোম্পানি’ ও ‘চ্যাং গুয়াং স্যাটেলাইট টেকনোলজি কোম্পানির’ ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, দুটি প্রতিষ্ঠানই ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী রুশ সংগঠন ভাগনার গ্রুপকে উচ্চমানের স্যাটেলাইট ছবি সরবরাহ করেছে।

এ নিয়ে আলাদা এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার নানা অপরাধ এবং ইউক্রেন যুদ্ধে যারা মস্কোকে সমর্থন ও অর্থ দিচ্ছে, তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে আমরা আমাদের হাতে থাকা অস্ত্রগুলো ব্যবহার করতে থাকব।