
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে ৩ হাজার ৬৪২ জন মানুষ সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। নতুন অভিবাসন ও আশ্রয় নীতিমালা থাকা সত্ত্বেও ইউরোপের সীমান্তে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। ভূমধ্যসাগরে অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতার ঘাটতিও বহু মানুষের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
গেল বছর ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টায় ৩,৫০০ জনের বেশি মানুষ সাগরে প্রাণ হারিয়েছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ফান্ডামেন্টাল রাইটস এজেন্সি (এফআরএ)। প্রতিবেদন তৈরিতে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার তথ্যের সাহায্য নিয়েছে সংস্থাটি।
‘ফান্ডামেন্টাল রাইটস রিপোর্ট-২০২’ শীর্ষক এ প্রতিবেদনে ইউরোপের মানবাধিকার পরিস্থিতির নানা দিক উঠে এসেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে উঠে এসেছে অভিবাসন সংকট, সীমান্তে অধিকার লঙ্ঘন ও ভূমধ্যসাগরে বিপজ্জনক যাত্রা।
এফআরএ জানায়, নতুন অভিবাসন ও আশ্রয় নীতিমালা থাকা সত্ত্বেও ২০২৪ সালজুড়ে ইউরোপের সীমান্তে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অব্যাহত থেকেছে। ভূমধ্যসাগরে অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতার ঘাটতিও বহু মানুষের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে ৩ হাজার ৬৪২ জন মানুষ সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। যদিও ২০২৩ সালের তুলনায় এ সংখ্যা কিছুটা কম (৪ হাজার ৮৮ জন)। তবুও এ সংখ্যাই প্রমাণ করে, ইউরোপগামী সাগরপথ এখনো বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক অভিবাসন রুট।
প্রতিবেদনে সীমান্তে নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে ইউরোপীয় দেশগুলোর ‘অকার্যকর’ পদক্ষেপের সমালোচনা করা হয়েছে। এফআরএ বলেছে, এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা জোরদার, অভিবাসীদের জন্য মানবিক আশ্রয় ও পরিষেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি উদ্ধারকাজে যুক্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোকে সহায়তা করা জরুরি।
এছাড়া যেসব এনজিও সাগরে ডুবে যাওয়া মানুষদের উদ্ধার করতে চায়, তাদের অনেক সময় আইনি বাধায় পড়তে হয়, যা খুবই উদ্বেগজনক। এফআরএ-এর প্রতিবেদন বলছে, সীমান্তে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের সঠিক তদন্ত হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই এসব ঘটনা চেপে যাওয়া হয়। সংস্থাটি চায়, এসব ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হোক। সেই সঙ্গে ইউরোপে বসবাসরত সংখ্যালঘুদের ওপর বেড়ে চলেছে বর্ণবিদ্বেষ, ইসলামবিদ্বেষ ও ইহুদিবিদ্বেষ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউরোপে বসবাসকারী প্রায় অর্ধেক মুসলিম নাগরিক বলেছেন, তারা জীবনে কোনো না কোনো সময়ে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন।
সংস্থাটির পরিচালক সির্পা রাউতিও বলেন, ‘ইউরোপে মৌলিক অধিকার এখন বড় চ্যালেঞ্জের মুখে। জীবন ও মানবিক মর্যাদাকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য ইউরোপীয় দেশগুলোর আইনি দায়বদ্ধতা রয়েছে—তাদের সেটি পালন করতে হবে।’