খাদ্যমন্ত্রীর পরিবারের ছবি তোলায় সাংবাদিক লাঞ্ছিত!

খাদ্যমন্ত্রীর পরিবারের ছবি তোলায় সাংবাদিক লাঞ্ছিত!

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের জামাতা বিএসএমএমইউ এর চিকিৎসক রাজন কর্মকারের লাশের পাশে থাকা স্বজনের আহাজারির ছবি মুঠোফোনে তুলতে গিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার সাংবাদিক ইমন রহমান।

সোমবার দুপর দেড়টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

সাংবাদিক ইমন রহমান বলেন, লাঞ্ছিত করার সময় তার মুঠোফোনটি কেড়ে নেন মন্ত্রী পরিবারের সঙ্গে থাকা সাঙ্গপাঙ্গরা। পরে শেরেবাংলা নগর থানার কনস্টেবল শামীমের কাছে মুঠোফোনটি দিয়ে থানার ওসির কাছে পাঠায়। থানা থেকে তাকে মুঠোফোনটি ফেরত দেওয়া হয়।

ইমন রহমান জানান, মন্ত্রীর জামাতা রাজনের মৃত্যুর সংবাদের ফলোআপ নিউজ করার জন্য সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে যান তিনি। সেখানেই ছিল রাজনের লাশ। দুপুর দেড়টার দিকে মন্ত্রীর স্বজনেরা মর্গে প্রবেশ করে। এ সময় স্বজনের আহাজারির ছবি মুঠোফোনে ধারণ করলে তাদের সঙ্গে থাকা ব্যক্তিরা তেড়ে আসে। তাদের মধ্যে সাত থেকে আটজন চারদিক থেকে ঘিরে ধরে প্রথমে ইমনের মুঠোফোনটি কেড়ে নেয়। পরে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর ক্ষিপ্ত হয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। মুঠোফোনটি একজন ছুড়ে ফেলতে গেলে আরেকজন ঠেকিয়ে দেয়। এ সময় মুঠোফোনটি ঘটনাস্থলে থাকা শেরেবাংলা নগর শানার কনস্টেবল শামীমকে দিয়ে তারা বলেন, ওসির কাছে নিয়ে যেতে। শামীম মুঠোফোনসহ ইমনকে শেরেবাংলা নগর থানায় নিয়ে যায়। পরে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ মুঠোফোনের ছবিগুলো মুছে ফেলে ইমনকে ফোন ফেরত দেন।

সাংবাদিক ইমন রহমান বলেন, ‘থানায় যাওয়ার পথে ওই কনস্টেবলকে ০১৭....৪৯৭ নম্বর থেকে ফোন করে বলেন, ‘মন্ত্রী ওসির সঙ্গে কথা বলেছেন। ফোন যেন ওই সাংবাদিক না পায়।’ পরে দেশ রূপান্তর থেকে ওই নম্বরে ফোন করা হলে ওই ব্যক্তি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

শেরে বাংলা নগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মুঠোফোনের ছবিগুলো ডিলিট করে ওই সাংবাদিককে ফোনটি ফেরত দেওয়া হয়েছে।’ এক প্রশ্নের উত্তরে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরাতো ফোন নিইনি। মন্ত্রীর স্বজন পরিচয় দিয়ে মুঠোফোনটি আমাদের কাছে দিয়েছে।’

এ বিষয়ে শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম বলেন, ‘তিনি সাংবাদিক, তাই ছবি তো তুলবেনই। তার ফোনটি তখনি ফেরত দেওয়া হয়েছে।’

গতকাল রবিবার ভোর ৩টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রাজনকে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। রাজনের সহকর্মীদের দাবি, অতীতেও স্ত্রীর নির্যাতনে গুরুতর অসুস্থ হন রাজন। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে লাশের ময়নাতদন্তের দাবি করেন তারা। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়াই খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের পরিবার লাশ নিতে চাইলে বাধা দেন রাজনের সহকর্মী চিকিৎসকরা। পরে শেরেবাংলা নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করে রাজনের পরিবার। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে রাজনের লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। পরে তার গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এমআই