সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতায় বাংলাদেশের ৪ ধাপ অবনতি

‘আওয়ামী লীগ-হাসিনার কড়া নীতির যৌথ শিকার বাংলাদেশি সাংবাদিকরা’

‘আওয়ামী লীগ-হাসিনার কড়া নীতির যৌথ শিকার বাংলাদেশি সাংবাদিকরা’

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ক বৈশ্বিক সূচকে অবনতি হয়েছে বাংলাদেশের।সূচকে থাকা ১৮০টি দেশের মধ্যে চার ধাপ অবনতি ঘটে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫০তম। প্যারিসভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার বৃহস্পতিবার বার্ষিক এই সূচক প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষণে ওই সূচকে বলা হয়েছে, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহীত কড়া নীতির যৌথ শিকার বাংলাদেশি সাংবাদিকরা’।

এই সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা লঙ্ঘন মারাত্মকভাবে বেড়েছে। মাঠ পর্যায়ে সংবাদকর্মীদের ওপর রাজনৈতিক কর্মীদের হামলা, নিউজ ওয়েবসাইট বন্ধ এবং সাংবাদিক গ্রেফতারের ঘটনা বেড়েছে বলে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার-এর বিশ্লেষণে উল্লেখ করা হয়েছে। 

বিশ্ব সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতা সূচক ২০১৯ (ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স ২০১৯) –এ শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে নরওয়ে। শীর্ষ পাঁচ দেশের সবগুলোই ইউরোপের। তালিকার সর্বশেষ দেশ ভিয়েতনাম।

ওই বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ‘২০১৮ সালের অক্টোবরে প্রণীত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে সর্বশেষ অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে নির্বাহীরা। এই আইনে নেতিবাচক প্রচারণার শাস্তি ১৪ বছরের কারাদণ্ড।’

প্যারিসভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার (আরএসএফ) সারাবিশ্বের সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়ন ও হামলার ঘটনা নথিবদ্ধ করে তা প্রতিরোধে কাজ করে। সংস্থাটির ২০১৯ সালের সূচকে দেখা গেছে সাংবাদিকদের ওপর ঘৃণা সহিংসতায় পরিণত হচ্ছে। আর এর ফলে সারাবিশ্বে ভয়ের পরিবেশ বাড়ছে।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে ফটো সাংবাদিক শহিদুল আলমের গ্রেফতারের ঘটনাকে সামনে এনেছে রিপোর্টাস উইদাউট বর্ডার। বলা হয়েছে সরকার বিরোধীদের দমন করতে বিচার ব্যবস্থাকে ব্যবহারের নজির এই ঘটনা। গত বছর গ্রেফতার হয়ে একশো দিনেরও বেশি কারাগারে কাটিয়েছেন এই ফটো সাংবাদিক।

আরএসএফ-এর সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অবস্থান স্বভাবতই নিচের দিকে। দুই ধাপ নিচে নেমে ভারতের অবস্থান ১৪০ আর তিন ধাপ নিচে নেমে পাকিস্তানের অবস্থান ১৪২।

আরএসএফ এর বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের নিরাপদে কাজ করতে পারা দেশের সংখ্যা কমে যাচ্ছে আর স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী সংবাদমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ জোরালো করা অব্যাহত রেখেছে।

পরপর তিন বছর ধরে এই সূচকে প্রথম স্থান অর্জন করলো নরওয়ে। ২০১৯ সালে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ফিনল্যান্ড। সাইবার নিপীড়ন বাড়ায় একধাপ নিচে নেমে সুইডেনের অবস্থান তিনে। আর চতুর্থ অবস্থানে নেদারল্যান্ডস। আর পঞ্চম অবস্থানে ডেনমার্ক। প্রধম পাঁচটি দেশের সবগুলোই ইউরোপের।

তালিকার নিচের দিকে সর্বশেষ অবস্থানে তুর্কমেনিস্তান। এর পর ধারাবাহিকভাবে ওপরের দিকে রয়েছে উত্তর কোরিয়া, ইরিত্রিয়া, চীন, ভিয়েতনাম।

জিএস/