সিজারের ছয় মাস পর পেট থেকে বের হলো গজ-ব্যান্ডেজ

সিজারের ছয় মাস পর পেট থেকে বের হলো গজ-ব্যান্ডেজ

সিজার করার ছয় মাস পর অস্ত্রোপচার করে এক নারীর পেট থেকে বের করা হয়েছে গজ-ব্যান্ডেজ। সিজারের সময় চিকিৎসক ভুলে পেটে গজ-ব্যান্ডেজ রেখেই সেলাই করেছিলেন। এরপর থেকে শুরু হয় পেট ব্যথা। ছয় মাস ধরে বিভিন্ন হাসপাতাল আর চিকিৎসকের কাছে ঘুরে ফরিদপুরে এসে ধরা পড়ে বিষয়টি।

ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম সোফিয়া বেগম (৪০)। তিনি মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার শিকার মঙ্গল ইউনিয়নের চরফতেবাহাদুর গ্রামের তোতা হাওলাদারের স্ত্রী।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ফরিদপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পুনরায় অস্ত্রোপচার করে তার পেটের গজ-ব্যান্ডেজ বের করা হয়েছে। ভিতরে পচন ধরায় চিকিৎসকরা তার সুস্থতার বিষয়ে কিছুই বলতে পারছেন না। হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন সোফিয়া।

ওই নারীর স্বামী তোতা হাওলাদার জানান, ছয় মাস আগে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে মাদারীপুরের নিরাময় ক্লিনিকে ভর্তি করান স্ত্রীকে। সেখানকার ডাক্তার রুনিয়া স্ত্রীকে সিজার করান। সিজার করে মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন সোফিয়া।

কিন্তু স্ত্রীর পেট ব্যথা কোনোভাবেই কমে না। প্রায় ১৫ দিন হাসপাতালে থেকে বাড়ি নেওয়ার পরে অপারেশনের ক্ষত থেকে পুজ বের হতে থাকলে আবার নিয়ে যাওয়া হয় ওই ডাক্তারের কাছে। তখন ডাক্তার পেটে প্রথমে ইনফেকশন পরে টিউমারের কথা বলে আবার হাসপাতালে ভর্তি করে।

তারপরও স্ত্রী সুস্থ না হলে মাদারীপুরেই অপর এক গাইনী চিকিৎসককে দেখায় ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এতেও স্ত্রী সুস্থ না হওয়াতে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মিটফোর্ড হাসপাতালে। এরপরে বরিশাল হাসপাতালে। কিন্তু কোথাও ডাক্তার তার স্ত্রীর রোগ ধরতে পারেনি।

সবশেষ স্ত্রীকে নিয়ে ফরিদপুরের শমরিতা জেনারেল হাসপাতালে এলে এখানকার সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. ফজলুল হক শোভন অপারেশন করে পেট থেকে গজ ব্যান্ডেজ বের করেন। তিনি বলেছেন, পেটের ভিতরে নাড়িতে পচন ধরেছে, আল্লাহকে ডাকেন।

চিকিৎসক মো. ফজলুল হক শোভন বলেন, ওই রোগীকে যখন আনা হয় তখনই তার পেট থেকে পুজ আর বিকট দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। ছয় মাস আগে রোগীর সিজার করা হয়েছিল মাদারীপুরের নিরাময় ক্লিনিকে। পরে আবার সেলাই ওপেন করা হয়েছিল, ওরা নাকি বলেছিল, পেটে টিউমারের কথা। কিন্ত আমরা টিউমার জাতীয় কিছু পাইনি। পরে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেই। অস্ত্রোপচারে পেটের ভেতর থেকে বড় একটি গজ ব্যান্ডেজ বের করেছি।

এই চিকিৎসক আরো বলেন, রোগীর অবস্থা এখন খুবই ক্রিটিক্যাল। অন্তত তিনদিন না যাওয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাবে না।

এমআই