১৮ লাশ হস্তান্তর

১৮ লাশ হস্তান্তর

রাজধানীর বনানীর বহুতল ভবন এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ১৯ জনের মধ্যে ১৮ জনের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. বোরহান উদ্দিন।

তিনি জানান, ১৯টি লাশের মধ্যে ১৮টি স্বজনদের বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।শ্রীলংকার নাগরিক নিরস ডি কে রাজের লাশ হস্তান্তর করা হয়নি।তার লাশ রয়েছে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে।

ডা. বোরহান উদ্দিন আরো জানান, বৃহস্পতিবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৫ জন, কুর্মিটোলা হাসপাতালে ৭ জন ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ৭ জনের লাশ আনা হয়। ঢামেক হাসপাতাল মর্গে মোট ৯টি লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে।বাকী দুটি লাশ অন্য হাসপাতাল থেকে এখানে আনা হয়।

বনানী থানা পুলিশ ও নির্বাহী মেজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ঢামেকের লাশগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- গাজীপুরের মো. মির্জা আতিকুর রহমান (৩৫), পাবনার আমির হোসেন রাব্বী (২৯) , কুষ্টিয়ার মো. ইখতিয়ার হোসেন (৩২), রাজধানীর খিলক্ষেতের শেখ জারিন তাসমিম বৃষ্টি (২৫), লালমনিরহাটের আনজির আবির (২৪), মিরপুরের মো. মনজুর হাসান (৫০), নারায়ণগঞ্জের মো. ফজলে রাব্বী (৩৫), আব্দুল্লাহ আল ফারুক ও রুমকি আক্তার।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার সকালে লাশগুলোর ময়নাতদন্ত হয় ঢাকা মেডিকেলে।ময়নাতদন্ত করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের অধ্যাপক ড. সোহেল মাহমুদ।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার দুপুরে বনানীর ১৭ নম্বর রোডে ২২ তলা এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ভবনের ৯ম তলা থেকে সূত্রপাত। এ ঘটনায় শ্রীলংকান এক নাগরিকসহ ১৯ জন নিহত এবং ৭৩ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।নিখোঁজ রয়েছেন ২০জন।

নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে আশঙ্কা করেন সংশ্লিষ্টরা। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট কাজ করে।এদের সঙ্গে যোগ দেন সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীর সদস্যরা। এলাকার সাধারণ মানুষও উদ্ধার কাজে অংশ নেন। উদ্ধার কাজে অংশ নেয় ৫টি হেলিকপ্টার। বালি-পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালানো হয়। হেলিকপ্টারগুলো বাতাস দিয়ে ধোঁয়া সরানোর চেষ্টা করে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ৬ ঘণ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

সন্ধ্যায় একাংশের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে প্রবেশ করেন। সেখানে আহত ও নিহতদের উদ্ধার করে নিচে নামিয়ে আনেন।

এদের অনেকেই দগ্ধ হয়েছেন। ধোঁয়ার কারণে অজ্ঞান হয়েও মারা গেছেন কেউ কেউ। আবার জীবিতও অনেককে উদ্ধার করা হয়। ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) মেজর একেএম শাকিল নেওয়াজ বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে বলেন, বনানী এফআর টাওয়ারের আগুনে ১৯ জন মারা গেছেন।

২০ ফেব্রুয়ারি চুড়িহাট্টা অগ্নিকাণ্ডের ৩৬ দিনের মাথায় বনানীর এফআর টাওয়ারে অগুন লাগে। চুড়িহাট্টায় মৃতের সংখ্যা ছিল ৭১।

এর আগে পুরান ঢাকার নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডে ১১৯ জনের মৃত্যু হয়। এবার বনানীর এফআর টাওয়ারে মৃত ১৯। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় প্রতিদিনই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে।

এমআই