সুপ্রভাত বাসের মালিক গোপাল আটক

সুপ্রভাত বাসের মালিক গোপাল আটক

বিইউপি শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরীকে চাপা দিয়ে হত্যার ঘটনায় সুপ্রভাত পরিবহনের ঘাতক বাসটির (ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৪১৩৫) মালিক গোপাল চন্দ্র কর্মকারকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)-এর দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে মুগদার একটি বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়।

জানা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আবরারের বাবার দায়ের করা মামলায় বাসটির মালিক গোপাল চন্দ্রকে আটক করা হয়। গুলশান থানায় দায়ের করা মামলাটির তদন্ত করছে ডিবি (উত্তর) পুলিশ। মামলার এজাহারে বাস মালিক গোপালের নাম না থাকলেও পরে জানা গেছে, আবরারকে চাপা দেওয়ার আগে আরও এক শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দিয়ে আহত করে তার মালিকানাধীন বাসটি। তখন যাত্রীরা চালককে আটক করে ট্রাফিক পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এরপর মালিকের নির্দেশে ড্রাইভিং সিটে বসে বাসটি নিয়ে পালানোর সময় কন্ডাক্টর ইয়াসিন আরাফাত নদ্দার প্রগতি সরণিতে বিইউপির শিক্ষার্থী আবরারকে চাপা দেয় এবং ঘটনাস্থলেই আবরার মারা যান।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গোপাল চন্দ্র কর্মকারের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিএমপি উপকমিশনার মশিউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা তাকে খুঁজছি। গ্রেফতার করা হলে জানানো হবে।’

এর আগে, ২৭ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, ‘বাসটির চালক ও কন্ডাক্টরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ১৯ মার্চ ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকা থেকে সুপ্রভাত বাসটি ছেড়ে আসে। তখন চালক ছিলেন সিরাজুল ইসলাম। বাসটি গুলশানের শাহজাদপুর বাঁশতলা এলাকা অতিক্রম করার সময় মিরপুর আইডিয়াল গার্লস ল্যাবরেটরি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সিনথিয়া সুলতানা মুক্তাকে চাপা দেয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। তখন পরিবহনের যাত্রীরা চালক সিরাজুলকে ট্রাফিক পুলিশে সোপর্দ করেন। ঘটনাস্থলের কিছু দূরে বাসটি রাখা হয়। এসময় কন্ডাক্টর ইয়াসিন আরাফাত বাসের মালিকের কাছে ফোন দিয়ে জানায়, বাসটি এখানে থাকলে জনগণ পোড়াতে বা ভাঙচুর করতে পারে। তখন মালিক আরাফতকে দ্রুত বাসটি সেখান থেকে নিয়ে সরে পড়তে বলেন। এরপর চালকের আসনে বসে কন্ডাক্টর বাসটি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় বিইউপির ছাত্র আবরার বাসটির নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারান।’

আবদুল বাতেন আরো বলেন, ‘পুলিশ প্রথমিকভাবে ধারণা করছিল, বাসচালকই আবরারকে চাপা দেয়। কিন্তু চালককে গ্রেফতারের পর ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জানা যায়, তখন বাস চালাচ্ছিল কন্ডাক্টর ইয়াসিন আরাফত। ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও মালিক গোপালের নির্দেশে কন্ডাক্টর বাস চালাতে গেলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।’

প্রসঙ্গত, রাজধানীর নদ্দা এলাকায় ১৯ মার্চ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বাসচাপায় নিহত হন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এর শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী। যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে সুপ্রভাত নামের একটি বাস তাকে চাপা দেয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। ঘাতক বাস সুপ্রভাত পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল, ঘাতক চালকের ফাঁসির দাবিসহ আট দফা দাবিতে বেশ কয়েকটি সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

এমআই