কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিখোঁজদের স্বজনদের আহাজারি

কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিখোঁজদের স্বজনদের আহাজারি

সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের দেখতে কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিড় জমিয়েছেন হাজারো মানুষ।

উপবনে থাকা যাত্রীদের খোঁজ নিতে এসেছেন তাদের স্বজনেরা। এ সময় নিখোঁজদের স্বজনদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

কুলাউড়ার বুকশিমুল গ্রামের বাসিন্দা আনু মিয়া কলেজ পড়ুয়া ছেলে শাকিলের খোঁজে এসে বলেন, উপবন এক্সপ্রেসে করে তার ছেলে ঢাকায় যাচ্ছিল। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালে ছুটে এসেছেন।

এখন পর্যন্ত ছেলে শাকিলের খোঁজ পাননি জানিয়ে আনু মিয়া বলেন, মুঠোফোনেও ছেলেকে পাচ্ছেন না তিনি। চিকিৎসা নিতে আসা রুবেল নামের এক যাত্রী জানান, রেলের নিচে অনেক লাশ এখনো চাপা পড়ে আছে।

কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ফটক থেকে ভেতর পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অনেক মানুষ অ্যাম্বুলেন্সে থামিয়ে আহতদের খোঁজ করেন।

রবিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে উপবন এক্সপ্রেস ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এতে ঘটনাস্থলে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে এবং অন্তত ২৫০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত কুলাউড়া প্রতিনিধি বলেন, সাতটি বগির মধ্যে দুটো ব্রিজের নিচে পড়েছে, লাইন থেকে ছিটকে পড়েছে দুটি। আর তিনটি লাইনচ্যুত হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুল হক সাত জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করছেন।

ঘটনাস্থল থেকে কুলাউড়া উপজেলার চেয়ারম্যান এ এক এম সফি আহমদ জানান, আমরা চারজনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। এর মধ্যে তিনজন নারী ও একজন পুরুষ রয়েছেন। নিহত একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি কুলাউড়ার সাবেক পৌর মেয়রের ভাই আব্দুল বারির স্ত্রী বলে জানা গেছে। বাকিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় সাংবাদিকরা বলেন, ঘটনাস্থলে ৫ জন ও কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল স্টেশন থেকে ২০০ মিটার দূরে কালামিয়া বাজার সংলগ্ন একটি ব্রিজে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে ভারী যান চলাচল বন্ধ থাকায় ট্রেনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন ঢাকাগামী যাত্রীরা। ফলে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি সিলেট থেকে ছেড়ে যায়।

এ এক এম সফি আহমদ বলেন, পাঁচটা বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। একটা দুমড়ে-মুচড়ে ব্রিজের নিচে চলে গেছে।

খবর পেয়ে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম ও পুলিশ সুপার শাহজালাল ঘটনাস্থল এবং হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।

এমজে/