মাদক কারবারিকে ছেড়ে রিকশাচালকের বিরুদ্ধে মামলা!

মাদক কারবারিকে ছেড়ে রিকশাচালকের বিরুদ্ধে মামলা!

গাজীপুরের কালীগঞ্জে এসআইয়ের বিরুদ্ধে মাদক কারবারিকে ছেড়ে এক নিরীহ রিকশাচালককে মামলায় জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। উদ্ধার করা ইয়াবার পরিমাণ নিয়েও দেখা গেছে গরমিল। ঘটনার এক দিন পর গত সোমবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

অভিযুক্ত এসআইয়ের নাম আব্দুর রহমান। ছেড়ে দেওয়া মাদক কারবারি রাসেল দর্জি (৩৫) উপজেলার কাপাইশ গ্রামের মোন্তাজ উদ্দিন দর্জির ছেলে।

গত ২০ জুন রাতে মাদক কারবারি রাসেল ছৈলাদি গ্রাম থেকে ৫০ পিস ইয়াবা নিয়ে পোটান দক্ষিণ পাড়া গ্রামের কাউছারের (২৭) রিকশায় ফিরছিল। পথে স্থানীয় চৌকিদার বোরহান শেখ মাদক কারবারি রাসেল ও রিকশাচালক কাউছারকে আটক করেন। পরে রাসেলের সহযোগী ছৈলাদি গ্রামের সফুর উদ্দিন শেখের ছেলে তাইজুল ইসলাম, সামছু শেখের ছেলে বাদল শেখ ও মফিজ উদ্দিন ওরফে বুইড্ডা শেখের ছেলে জয়নাল শেখ চৌকিদারকে আর্থিক সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইয়াবা রেখে রাসেলকে ছাড়িয়ে নেয়। পরদিন তাজুল শেখের বিকাশ নম্বরে রাসেল চৌকিদারের জন্য টাকা পাঠায়।

ঘটনাটি জানতে পেরে স্থানীয় জামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান থানার ওসিকে জানান। ওসির নির্দেশে কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহমান চৌকিদারকে সঙ্গে নিয়ে গত শুক্রবার সকালে মাদক কারবারি রাসেল ও রিকশাচালক কাউছারকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। পরদিন সকাল পর্যন্ত তাদের হাজতে রাখা হয়। চৌকিদারের কাছে থানা ৫০ পিস ইয়াবার মধ্যে ৪৪ পিস জব্দ দেখিয়ে শনিবার সকালে এসআই রহমান বাদী হয়ে রিকশাচালক কাউছারকে আসামি করে মাদক মামলা করেন। রবিবার সকালে কাউছার ও রাসেলকে গাজীপুর আদালতে নেওয়ার পথে কালীগঞ্জের কাপাসিয়া মোড়ে রাসেলকে ছেড়ে দিয়ে শুধু কাউছারকে আদালতে পাঠানো হয়। কাউছারের পরিবারের ধারণা, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে রাসেলকে ছেড়ে কাউছারকে মামলায় ফাঁসিয়েছেন এসআই আবদুর রহমান। রাসেল এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি।

স্থানীয়রা জানায়, ওই এসআইয়ের বিরুদ্ধে আগেও কয়েকবার আটক বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠছেন।

জামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক মাস্টার জানান, ঘটনার পর তিনি স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে চৌকিদার বোরহানের সংশ্লিষ্টতার কথা শুনে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবগত করেন। কিন্তু পুলিশ মাদক কারবারিকে ছেড়ে নিরীহ রিকশাচালককে আসামি করে আদালতে পাঠাল। এটা অন্যায়।

কালীগঞ্জ থানার ওসি আবুবকর মিয়া জানান, মাদক কারবারি রাসেলের বিষয়টি তার জানা নেই। কাউছারকে ইয়াবাসহ আটক করায় তাঁকে মামলা দিয়ে গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।

গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।

এমজে/