কাশ্মীরের বিশেষ সুবিধা কেড়ে নেয়ার নেপথ্যে অমিত শাহ?

কাশ্মীরের বিশেষ সুবিধা কেড়ে নেয়ার নেপথ্যে অমিত শাহ?

চলতি বছরর ভারতের ১৭তম লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির জয় ছিনিয়ে নেওয়ার নেপথ্যে দলটির অন্যতম প্রধান কাণ্ডারী অমিত শাহ। মোদি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চেয়ারে বসার পর জাতীয় রাজনীতিতে আলোচিত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার নেপথ্যে নাকি সেই অমিত শাহ- এমনটাই ব্যাখ্যা রাজনীতিবিদদের একাংশের। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদের মতো এত বড় সিদ্ধান্তকে বাস্তবে করে দেখানোর জন্য যে সুকৌশলে এগিয়েছিলেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি, তাতে বিজেপি নেতা তো দূরঅস্ত এমনকি মোদির মন্ত্রিসভার অনেক শীর্ষ মন্ত্রীও আঁচ করতে পারেননি কী হতে চলেছে। মন্ত্রীত্বের পরও দলের সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে হাত তুলে নেননি অমিত শাহ। বরং দল পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি বরাবরই দু’পা বাড়িয়ে থাকেন। সেই অমিত শাহ-ই সম্প্রতি বিজেপি সাংসদদের নিয়ে ২ দিনের বিশেষ কর্মসূচিতে কোনো বক্তব্যই পেশ করেননি। শুধুমাত্র ওই কর্মসূচির প্রথম দিন যা ভাষণ দিয়েছিলেন।

বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতির এমন আচরণেই বিজেপি সাংসদদের একাংশের মধ্যে ফিসফাস শুরু হয়েছিল। এমনকী, ৩৭০ ধারা রদের প্রস্তাব পেশের ২ দিন আগে সংসদে নিজের দফতর থেকেই সব কাজ সারছিলেন তিনি।

দলের এক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে সিদ্ধান্তের কথা শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, এই দু’জনই জানতেন। অন্যান্য শীর্ষমন্ত্রীরা পর্যন্ত টের পাননি কী হতে চলেছে। তাদের সুকৌশলে একটু একটু করে তথ্য জানানো হতো।

রবিবার গভীর রাতে বিলের খসড়া চূড়ান্ত করেছিলেন আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ। আর অন্য মন্ত্রীরা এই বড় পরিকল্পনার কথা জানতে পেরেছেন সোমবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে। তার আগে পর্যন্ত দলের মন্ত্রীদেরও কিছু জানাননি অমিত শাহ।

এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায়, রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য শীর্ষ মন্ত্রী ও দলের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন অমিত শাহ। তবে তাদের এ ব্যাপাকে কোনো কথা বলা হয়নি। সে সময় অমিত শাহ কেবল বলেছিলেন, সংসদে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস করা হবে তাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন।

অন্যদিকে, প্রথম মোদি সরকারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন রাজনাথ সিং। সে সময় পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমেই কাশ্মীর ইস্যু সমাধানের পথে হেঁটেছিলেন তিনি। কিন্তু বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের সঙ্গে শান্তি আলোচনা করে সময় নষ্ট করতে চাননি অমিত শাহ। বরং দৃঢ় হাতে কাশ্মীর সমস্যা মোকাবিলা করার দিকে এগোলেন। অমিত শাহ বরাবরই মনে করেছিলেন যে, কাশ্মীর সমস্যা মোকাবিলায় একমাত্র হাতিয়ার ৩৭০ ধারা রদ। আর তা বুঝেই সেই চরম সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেননি তিনি।

এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘উপত্যকায় যা পদক্ষেপ করা হয়েছে, তাতে অমিত শাহের ভূমিকা রয়েছে। এটা ছিল তার মিশন। উনি সফল হয়েছেন’।

তবে এই মিশন সফল করার জন্য অমিত শাহকে পুরোদমে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। ৩৭০ ধারা রদের সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে কাশ্মীরকে কার্যত নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল। মেহবুবা মুফতি, ওমর আবদুল্লার মতো হেভিওয়েট নেতাদের গৃহবন্দি করার মতো কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।

এমআই