ভূমধ্যসাগরে আটকে পড়া ৩৫৬ শরণার্থী গ্রহণে রাজি ইইউ’র ৬ দেশ

ভূমধ্যসাগরে আটকে পড়া ৩৫৬ শরণার্থী গ্রহণে রাজি ইইউ’র ৬ দেশ

ভূমধ্যসাগরে আটকে পড়া ৩৫৬ অভিবাসীকে গ্রহণে রাজি হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ৬টি দেশ। জাহাজটিতে খাবারের মজুদ ফুরিয়ে যাচ্ছে- সম্প্রতি দাতব্য সংস্থাগুলোর এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণের পর ইউরোপীয় দেশগুলো এই শরণার্থী গ্রহণে রাজি হলো।

মাল্টার প্রধানমন্ত্রী জোসেফ মাস্কট শুক্রবার জানিয়েছেন, ভূমধ্যসাগরে একটি উদ্ধারকারী জাহাজে থাকা ৩৫৬ অভিবাসীকে গ্রহণে রাজি হয়েছে ৬টি ইউরোপীয় দেশ। চুক্তি অনুযায়ী, ৩৫৬ জনের মধ্যে ফ্রান্স নেবে ১৫০ জনকে।

জোসেফ মাস্কট আরো জানান, দেশটির নৌবাহিনী প্রথমে আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে অভিবাসীদের নিজেদের ভূখণ্ডে নিয়ে আসবে। পরে তাদের ফ্রান্স, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, পর্তুগাল ও রোমানিয়াতে পাঠানো হবে।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানানো হয়, নরওয়ের পতাকাবাহী ওশেন ভাইকিংস নামের উদ্ধারকারী জাহাজটি প্রায় দুই সপ্তাহ আগে অভিবাসীদের নামিয়ে দেয়ার জন্য বন্দরে নোঙর করার জরুরি আহ্বান জানিয়েছিল। এই জাহাজটি পরিচালনা করছে দাতব্য সংস্থা এমএসএফ। ৯-১২ই আগস্ট লিবিয়া উপকূলে চারটি নৌকা থেকে এই অভিবাসীদের উদ্ধার করে ওশেন ভাইকিংস।

ইউরোপিয়ান কমিশনের সঙ্গে চুক্তির পর জোসেফ মাস্কট টুইটারে লিখেছেন, মাল্টায় কোনও অভিবাসীকে রাখা হবে না।

উদ্ধারকর্মী নিকোলাস রোমানিউক এই খবরকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে কবে অভিবাসীদের স্থানান্তর করা হবে না তা এখনও জানেন না তিনি।

২০১৮ সালে ব্রাসেলসে একের পর এক বৈঠকে মিলিত হন ইইউ নেতারা। সারারাত আলোচনা শেষে একটি অভিবাসন চুক্তিতে পৌঁছান ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ নেতারা। সেহোফারের দলের এক উচ্চ পর্যায়ের নেতা ওই চুক্তিকে ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছিলেন।

যা ছিল ওই চুক্তিতে
এক. ইইউতে পৌঁছানো শরণার্থীদের ভাগ করে নিতে রাজি হন নেতারা। তবে এটি হবে স্বেচ্ছা ভিত্তিতে।

দুই. ইইউতে ‘নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্র’ খোলা হবে, যেখানে আশ্রয়ের আবেদন যাচাই করা হবে।

তিন. ভূমধ্যসাগরে উদ্ধার করা নৌকায় থাকা শরণার্থীদেরও বিভিন্ন দেশ স্বেচ্ছাভিত্তিতে নিতে রাজি হয়েছে। এটি ইটালির অন্যতম প্রধান দাবি ছিল। সম্প্রতি ইটালি শরণার্থী বোঝাই দু’টি জাহাজ তাদের উপকূলে ভিড়তে দেয়নি। পরে সেগুলোর একটি গ্রহণ করতে রাজি হয় স্পেন, অন্যটি গ্রহণ করে মাল্টা।

চার. অভিবাসীদের ইউরোপগামী জাহাজে চড়তে নিরুৎসাহিত করতে ইইউ’র বাইরে, বিশেষত উত্তর আফ্রিকায় ‘জাহাজ অবতরণ প্লাটফর্ম’ স্থাপন করতে সম্মত হয়েছেন ইইউ নেতারা।

পাঁচ. ইউরোপে শরণার্থী আসা ঠেকাতে তুরস্ককে আরও তিন বিলিয়ন ইউরো দিতে সম্মত হয়েছেন নেতারা। ২০১৬ সালে তুরস্কের সঙ্গে ইইউ একটি চুক্তি সই করেছিল। তার আওতায় প্রথমবারও তিন বিলিয়ন ইউরো পেয়েছিল তুরস্ক। সেই চুক্তির বাস্তবায়ন দেখতে চায় ইউরোপিয়ান নেতারা।

এতে সম্মত হয় শরণার্থীদের গ্রহণ করতে ইউরোপীয় ৬টি দেশ। ভূমধ্যসাগরে থাকা জাহাজটিতে ওশেন ভাইকিংসে আটকে পড়াদের বেশিরভাগই প্রাপ্ত বয়স্ক। এদের দুই-তৃতীয়াংশ সুদানের নাগরিক। বাকিরা আইভরি কোস্ট, মালি ও সেনেগালের। জাহাজটিতে চার নারী ও পাঁচ শিশু রয়েছে।

এমআই