আমার আব্বুকে ফিরিয়ে দিন, আমরা আর পারছি না: ইনশা

আমার আব্বুকে ফিরিয়ে দিন, আমরা আর পারছি না: ইনশা

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘আমার আব্বুকে ফিরিয়ে দিন। আমরা আর পারছি না। আমার লেখাপড়া প্রায় বন্ধ হতে চলেছে। আমার ৪ বছরের ছোট ভাই ইনাম শুধু আব্বু আব্বু করে ডাকে।মানসিকভাবে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। আমার মা আগের মত কথা বলে না। ঠিকমত রান্নাও করে না। আমাদের ভবিষ্যত অন্ধকার। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) উদ্যোগ গ্রহণ করলেই বাবাকে ফেরত পেতে পারি।’ এভাবেই কাঁদছিল আর গণমাধ্যমের সামনে বক্তব্য রাখছিলেন ঢাকা এ্যাডভেন্টিস্ট প্রিসেমিনারী এন্ড স্কুল (ড্যাপস) এ পড়ুয়া ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী ইনশা।

গত ১৯ জুন ২০১৯ মিরপুরের কাঠ ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন বাতেন (৬০) গুম হন। তার ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে ইনশা। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে বাবাকে ফিরে পেতে এভাবেই আকুতি জানায় শিশুটি।

এ সময় তার মা নাসরীন জাহান স্মৃতি বলেন, আর কার কাছে বিচার চাইবো। কি অপরাধ করেছে আমার স্বামী। সে কখনো রাজনীতি করেনি। একজন সাধারণ কাঠ ব্যবসায়ী হিসেবে মিরপুরে ছোট পরিবার নিয়ে বেশ সুখে শান্তিতেই চলে যাচ্ছিল। হঠাৎ এক কাল বৈশাখী ঝড়ে সবকিছু তছনছ হয়ে গেল। এখন চোখে মুখে কিছুই দেখছি না। শিশু দু’টি সন্তান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। যে যা বলছে সেখানেই ছুটছি। যদি স্বামীর সন্ধান পাই। কিন্তু কোথাও পাইনি। তাই আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা। তিনি বলেন, শিশু ইনশা-ইনামের মত অনেক শিশুরা তাদের পিতাকে হারিয়ে এখন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। তাদের অনেকের লেখাপড়াও বন্ধ হয়ে গেছে। ক’দিন আগে কুষ্টিয়ার আবরারের বাসায় তার মা-বাবাকে দেখতে গিয়ে পাশেই কুষ্টিয়ার গুম হওয়া সাজ্জাদ হোসেন সবুজের বাসায় গিয়েছিলাম। তার একমাত্র মেয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। অথচ তার ৭ম শ্রেণিতে পড়ার কথা ছিল। ৫ বছর আগে গুম হয়ে যাওয়ায় তার পড়ালেখার ক্ষতির পাশাপাশি মানসিক রোগিতে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করলেই বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করে যারা গুম হয়েছেন তাদেরকে খুঁজে বের করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারেন। আমি এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।