‘আই লাভ ইউ সম্রাট’ লিখে গৃহবধূর আত্মহত্যা

‘আই লাভ ইউ সম্রাট’ লিখে গৃহবধূর আত্মহত্যা

রাজবাড়ী সদরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে জয়া মালী (১৮) নামের এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। তবে আত্মহত্যার আগে চিরকুটে তার স্বামীর দোষ নেই বলে লিখে গেছেন তিনি। জয়া মালী রাজবাড়ী পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের ভবানীপুরের বাসিন্দা।

রবিবার বিকেলে গৃহবধূ জয়া মালীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার স্বামী সম্রাট শহরের মুরগি ফার্ম বাজারে সেলুনের কাজ করেন। তারা ভবানীপুরের মীর্জা আল মাসুদের বাসায় ভাড়া থাকতেন।

আত্মহত্যার আগে চিঠিতে জয়া মালী লিখেছেন, ‘আমার মারা যাওয়ার কারণ সবার ভালো থাকা। আমি ম‌ারা গেলে কয়েক দিন সবাই কাঁদবে, কিন্তু পরে ঠিক হয়ে যাবে। আমি জানি, আমাকে নিয়ে মা অনেক দুশ্চিন্তা করে। আমাকে নিয়ে মাকে আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না। সত্যি বলছি, আমার আর বেঁচে থাকার ইচ্ছা নেই। সম্রাট ভালো থেকো, সবাই ভালো থেকো।’

তিনি লিখেন, ‘আমি নিজের ইচ্ছায় গলায় দড়ি দিয়েছি। আমার মৃত্যুতে সম্রাটের কোনো দোষ নেই। দয়া করে কেউ সম্রাটকে দোষ দেবেন না। সম্রাটকে কেউ কোনোভাবে দোষ দেবেন না। এটা সবার কাছে আমার শেষ চাওয়া।’

জয়া মালী চিঠিতে আরও লিখেছেন, ‘বারবার সম্রাট আর আমার ঝগড়া লাগবে। এ নিয়ে বার বার সবার দুশ্চিন্তা হবে, তা আমি চাই না। আমি জানি, আমার বাড়ির সবাই চায় আমি ভালো থাকি। বেঁচে থেকে কাউকে দেখাতে পারব না আমি ভালো আছি। তাই বিদায় জানালাম। হয়তো আমি বাবার বাড়ি ফিরে যেতে পারতাম। কিন্তু ভাবলাম, বাড়ি ফিরে এই মুখ সবাইকে দেখাতে আমার লজ্জা লাগবে। আমি পারব না কাউকে দেখাতে আমার পোড়া মুখ। আই লাভ ইউ সম্রাট।’

ওই বাড়ির মালিক মীর্জা আল মাসুদ বলেন, ‘সকালে জয়া মালী ও সম্রাটের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় জয়া মালীকে চড়-থাপ্পড় দেয় সম্রাট। পরে সম্রাট বাজারে চলে যায়। দুপুরে জয়া মালীর ঘরের দরজা বন্ধ দেখে পাশের ভাড়াটিয়া বিলকিস বেগম ডাকাডাকি করে। এরপর আমি এসেও ডাকাডাকি করি। কিন্তু সাড়া-শব্দ না পেয়ে জানালা দিয়ে দেখি জয়া মালী ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে ঝুলে আছে। পরে তার স্বামীকে আমি বিষয়টি জানাই।’

রাজবাড়ী সদর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘খবর পেয়ে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। আত্মহত্যার বিষয়ে কয়েক পৃষ্ঠার একটি চিঠি পাওয়া গেছে। তবে চিঠির লেখা জয়া মালীর কিনা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তার হাতের লেখার সঙ্গে চিঠির লেখা মিলিয়ে দেখার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

এমজে/