পাবলিক প্লেসে ৯৭.৯৬ শতাংশ নারী ও কন্যাশিশু যৌন হয়রানির শিকার

পাবলিক প্লেসে ৯৭.৯৬ শতাংশ নারী ও কন্যাশিশু যৌন হয়রানির শিকার

জনসম্মুখে অর্থাৎ পাবলিক প্লেসে ৯৭.৯৬% নারী ও কন্যাশিশু এক থেকে একাধিকবার যৌন হয়রানির শিকার হয় বলে জানিয়েছে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম নামের একটি সংগঠন। এ ছাড়া সংগঠনটি জানায়, ৫৯.৪৫ শতাংশ নারী ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সে প্রথমবারের মতো যৌন হয়রানির শিকার হয়।

বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনটির সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি। সংগঠনটির ২০১৭- ২০১৮ সালে করা একটি গবেষণায় এসব তথ্য উঠে আসে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নাছিমা আক্তার জলি বলেন, ‘বর্তমানে নারী ও শিশুদের প্রতি ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। যার ধরন ও মাত্রা প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘শুধু কন্যাশিশুরাই নয়, ছেলে শিশু ও প্রতিবন্ধীসহ সকল বয়সী নারীর প্রতিও ঘটছে ধর্ষণ, ধর্ষণের পর হত্যা এবং নানাবিধ যৌন হয়রানি। নির্যাতনকারীদের বিকৃত মানসিকতা থেকে শিশু-বৃদ্ধা-তরুণী কেউই নিরাপদ নয়।’

হাইকোর্টের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে নির্দেশনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি যৌন হয়রানি প্রতিরোধে একটি সমন্বিত আইন প্রণয়ন করা এখন সময়ের দাবি। ২০০৯ সালে হাইকোর্টের নির্দেশনামূলক নীতিমালায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং কর্মস্থলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু যৌন হয়রানি কেবলমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং কর্মস্থলেই ঘটছে না। এর পরিধি ব্যাপক ও বিস্তৃত। পথে-ঘাটে, যানবাহনে, খেলার মাঠে তথা সকল জনপরিসরে, এমনকি গৃহের অভ্যন্তরেও যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটছে।’

সংগঠনটির সভাপতি বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘গবেষণায় ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে সেটি হচ্ছে ৯৮ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির শিকার হয় হওয়ার তথ্য। আমাদের সমাজে নারী-পুরুষের সমান অধিকার। যদি আমরা নারীদের দুর্বল ভাবি তবে সমাজ আগাতে পারবে না। তাদের সহযোগিতা করলে সমাজ হবে আরও শক্তিশালী।’

সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায় দুই বছর ধরে সরাসরি ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে এই প্রতিবেদন করেছি। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি যতটা সম্ভব গবেষণাকে নিখুঁত ভাবে উপস্থাপন করতে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- অপরাজেয় বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদা বানু, গার্লস অ্যাডভোকেসি অ্যালায়েন্সের টিম লিডার ফারজানা মেহরীন এবং কলামিস্ট মো. আহাদ।