‘এনআরসি বাস্তবায়ন হলে এই অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হবে’

‘এনআরসি বাস্তবায়ন হলে এই অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হবে’

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের উপদেষ্টা ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী বলেছেন, ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধন আইনটি প্রতিষ্ঠা হলে সে দেশের সংখ্যালঘু মুসলমানরা এদেশে প্র‌বেশ করবে এবং এদেশের হিন্দু সম্প্রদায় সে দেশে যেতে পারে। যার কারণে একটি বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে। এবং সে দেশের মুসলমানরা যখন এদেশে আসবে এই দেশের সব ক্ষেত্রেই সমস্যা সৃষ্টি হবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা সবসময় গণতন্ত্রের পক্ষে ছিলাম আছি থাকব। যদিও বর্তমানে বাংলাদেশের সরকার অবৈধ। তার পরেও এসব বিষয় নিয়ে সরকারের পদক্ষেপ নেয়া উচিত। তিনি আরো বলেন,আমরা সব সময় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা চায় তাই ভারতের গণতন্ত্রকামী জনগণের পক্ষে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা ড. সুকমল বড়ুয়া, বিজন কান্তি সরকার, তপন মজুমদার, জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, অ্যাডভোকেট জন গোমেজ, দেবাশীষ রায় মধু, রমেশ দত্ত, তরুণ দে, উত্তম কুমার, প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী বলেন, ভারতের নাগরিক পঞ্জি বাস্তবায়ন হলে এই অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হতে পারে। ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধন বিল পাস হওয়াতে আমরা বাংলাদেশে বসবাসরত ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই বিল আইনে পরিণত হওয়ার ফলে বাংলাদেশের সামান্য কোনো ঘটনা ঘটলেই দেশ ত্যাগের প্রবণতা বাড়বে। সহজেই ভারতের নাগরিক হওয়া যাবে এই ধারণায় অধিকতর নিরাপত্তার আশায় ভারতে আশ্রয় নেওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, ফলে এক সময় এ দেশে হিন্দু সংখ্যা আশংকাজনকভাবে কমে যেতে পারে।

তিনি আরো বলেন, ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধন আইনটি ধর্মীয় বিভাজন এর ভিত্তিতে করার ফলে উভয় দেশের সংখ্যালঘুরা আতঙ্কিত। এবং সংখ্যাগুরুদের মধ্যে দুঃখবোধের জন্ম হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। একই সাথে ভারতে বসবাসরত নাগরিকত্বহীন সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হবে এবং স্বাভাবিকভাবে আমার দেশে অনুপ্রবেশের প্রবণতা দেখা দেবে। এবং ইতিমধ্যে কমবেশি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ ত্যাগী ভারতে অবস্থানকারী হিন্দুদের লাভ হলেও এদেশে বসবাসকারী হিন্দুদের লাভের সম্ভাবনা কম।

ভারতে ধর্মীয় বিভাজন এর ভিত্তিতে নাগরিক বিল পাশ হবার ফলে উভয় দেশে সংখ্যালঘুদের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশের উভয় সরকারের উচিত এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যাতে এই দেশের হিন্দুদের নিরাপত্তা বিঘ্নত না হয়। এবং ভারতের নাগরিক পঞ্জি বাস্তবায়ন হলে এই অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টও হতে পারে। তিনি বলেন, ভারতের জনগণ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নাগরিক পঞ্জির বিরুদ্ধে সোচ্চার তখন আমরা উদ্বিঘ্ন না হয়ে পারি না।