পুড়ে গেছে কালশী বস্তি, সব হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে অসহায় মানুষ

পুড়ে গেছে কালশী বস্তি, সব হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে অসহায় মানুষ

মধ্যরাতে হঠাৎ আকাশে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি তবুও থামছে না কালশী বস্তিতে লাগা আগুন।অবশেষে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস। নিয়ন্ত্রণে আসার আগেই সহায়-সম্বলসহ শেষ বিশ্রামের বস্তির সবগুলো বসত ঘর পুড়ে ছাই।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে মিরপুর কালশী এলাকার বাউনিয়াবাঁধ বস্তিতে ভয়াবহ আগুন লাগার পর তা ভস্মীভূত হয়। সব কিছু হারিয়ে সহায় সম্বলহীন মানুষগুলোর ঠাঁই হয়েছে খোলা আকাশের নিচে। শীতের এ তীব্রতায় এখন কিভাবে কোথায় থাকবেন তা নিয়েই চিন্তিত এখানকার অসহায় মানুষগুলো।

কালশী বস্তির মানুষের রাত ১২টার আগেই ছিল সাজানো সংসার। যেখানে সুখে-দুঃখে মাথা গুঁজে ছিলেন বস্তিবাসীরা। কিন্তু আচমকা আগুনে জীবনের হিসাব-নিকাশ বদলে গেল।

একটু আগে যেখানে সাজানো সংসার ছিল, যেটা সময়ের ব্যবধানে আগুন সব কেড়ে নিল। আগুনের দিকে নীরবে তাকিয়ে দেখছেন কিভাবে স্বপ্নের মৃত্যু ঘটলো। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও কান্নার রোল পড়ে বস্তিবাসীর মধ্যে। কারও সন্তানের খোঁজ মিলছিল না, কারও গবাদিপশু। সময় সংবাদের ক্যামেরার সামনে এমনি কিছু ভুক্তভোগীর কথা তুলে ধরা হলো।

বস্তিবাসী এক নারী গণমাধ্যমকে বলেন, আমি আমার সন্তানকে নিয়ে এই বস্তিতে থাকি। এখানে আমার ঘরের সঙ্গে আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। এদিকে আমি আমার ছেলেকেও খুঁজে পাচ্ছি না।

বস্তিতে থাকা একজন দুগ্ধ ব্যবসায়ী বলেন, আমার দুটি গরু ছিল। সেই গরু দুটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এই গরুর দুধ দিয়েই আমি আমার সংসার চালায়। আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেল। এখন থাকব কোথায়? খাব কি?

সুমন নামে এক বাসিন্দা বলেন, কে কখন কীভাবে বের হইছে ঠিক নাই। সব হারিয়ে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির রাতেই এখন খোলা আকাশে নিচে থাকতে হচ্ছে।

এদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লা বলেছেন, মসজিদের মাইকে ঘোষণা করে বস্তিবাসীকে একটি স্কুলে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেখানে তারা অবস্থান করবে। সকালের খাবারসহ সব বেলার খাবার দেওয়া হবে। শীতে যাতে তাদের কষ্ট না হয় সেজন্য কাপড় চোপড়ও দেওয়া হবে। সেখানে অবৈধ বৈদ্যুতিক ও গ্যাসের সংযোগ ছিল কিনা তা জানা ছিল না। থাকলেও কর্তৃপক্ষের তদারকি করা উচিত ছিল। করলে হয়তো আজকের এই আগুনের ঘটনা নাও ঘটতে পারতো।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে রাজধানী মিরপুরের কালশীর বাউনিয়াবাঁধ এলাকার হিরু মা নামে বস্তিতে ভায়াবহ আগুন লাগে। শুরুতে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। আগুনের ভয়াবহতা তীব্র হলে আরও ৬টি ইউনিট একত্রে প্রায় দুই ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।