বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর নির্মাণ ব্যয় বাড়ল ৭০৪৬ কোটি টাকা

বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর নির্মাণ ব্যয় বাড়ল ৭০৪৬ কোটি টাকা একনেক সভায় শেখ হাসিনা- ফোকাস বাংলা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় বাড়ল সাত হাজার ৪৬ কোটি টাকা। এ নিয়ে প্রকল্পটি মোট ব্যয় বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকায় দাঁড়াল। ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে প্রকল্পের নির্মাণকালও বেড়েছে। বর্ধিতকাল অনুযায়ী ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে।

বাড়তি এই ব্যয় এবং সময় অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী এবং একনেকেরও চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।

সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর নির্মাণ প্রকল্পসহ মোট ৮টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এসব প্রকল্পের মধ্যে ৬টি নতুন প্রকল্প বাকি দু'টি সংশোধনী। নতুন এবং সংশোধন মিলে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৪৬৮ কোটি টাকা। বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রকল্পে অর্থসহায়তা দিচ্ছে জাপান সরকারের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা। তারা প্রকল্পটি পুনমূল্যায়নে বাড়তি ব্যয়ের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছে। তাদের পর্যালোচনার কারণেই বাড়তি ব্যয় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাড়তি ব্যয়ের মধ্যে চার হাজার ৪২৫ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জাইকা। বাকি ব্যয় সরকারের নিজস্ব। এই প্রকল্পে মূল ব্যয় ছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। বাড়তি অর্থ ব্যয়ের সঙ্গে প্রকল্পের নির্মাণকালও দুই বছর বাড়ানো হয়েছে। ২০১৬ সালে মূল বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) প্রকল্পের নির্মাণ কাল ধরা হয়েছে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর।

বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু দেশের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে দুই অংশকে একত্রিত করেছে। সড়কের পাশাপাশি সেতুটিতে রেল সংযোগও রয়েছে। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারের স্টিলের এই রেলসেতুটি নির্মাণ করবে রেলপথ মন্ত্রণালয়। বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর সমান্তরাল ৩০০ মিটার উজানে নির্মিত হবে সেতুটি।

একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে, ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনে জরুরী পানি সরবরাহ প্রকল্প। ৭৩২ কোটি ৩২ লাখ টাকার এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা ওয়াসা। আমিন বাজার ল্যান্ডফিল্ড সম্প্রসারণ এবং আধুনিকায়ন।ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৮৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা। বাস্তবায়ন করবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। প্রকল্প ব্যয়ে ডিএনসিসির অংশ ৭৯ কোটি টাকা। শেখপাড়া (ঝিনাইদহ ) শৈলকুপা লাঙ্গল বাধ- ওয়াপদা মোড় (মাগুরা) মহাসড়ক প্রশস্তকরণ। ২৬৮ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি সরকারের নিজস্ব অর্থে নির্মাণ করা হবে। বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।

এছাড়া রাজশাহী বিসিক শিল্পনগরী-২ প্রকল্প। এটি সংশোধিত হয়ে ব্যয় বেড়েছে ১৩২ কোটি টাকা। বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন। পাবনার বেড়ার মুন্সিগঞ্জ থেকে খানপুর এবং কবিরহাট হতে রাজধরদিয়া পর্যন্ত যমুনা নদীর দুই ডান তীর সংরক্ষণ। ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৩৩ কোটি টাকা। বস্তবায়ন করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কুড়িগ্রাম জেলা সদর, রাজার হাট, ও ফুলবাড়ীর ধরলা নদীর বণ্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ বাম ও ডান তীর সংরক্ষণ।এটিও বাস্তবায়ন করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯৫ কোটি টাকা।

গতকাল অনুমোদিত অন্য প্রকল্পটি হচ্ছে, পদ্মানদীর ভাঙ্গন থেকে চাপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরভাঙ্গা ও শাজাহানপুর এলাকা রক্ষা।ব্যয় অনুমোদিত হয়েছে ৫৬৬ কোটি টাকা। এটিও বাস্তবায়ন করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।