দুই ব্যাংকের কয়েক হাজার কোটি টাকা লোপাট চিশতি পরিবারের

দুই ব্যাংকের কয়েক হাজার কোটি টাকা লোপাট চিশতি পরিবারের

সাবেক ফারমার্স ব্যাংকের দুটি শাখা থেকেই ১৮শ’ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন ব্যাংকটির তৎকালীন নির্বাহী চেয়ারম্যান মাহবুবল হক চিশতি ওরফে বাবুল চিশতি। এছাড়া রাষ্ট্রায়াত্ত্ব বেসিক ব্যাংক থেকে ৩শ’ কোটি টাকা নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে তার ভাই শামীম চিশতি। বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে দুই ভাইয়ের লুটপাটের এই চিত্র উঠে এসেছে। বাবুল চিশতির স্ত্রীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও এই লুটপাটে জড়িত। এরইমধ্যে তাদের নামে ১২টি মামলা করেছে দুদক।

২০১২ সালে অনুমোদন পাওয়ার মাত্র তিন বছরের মাথায় খেলাপী ঋণের ভারে স্থবির হয়ে পড়ে সাবেক ফারমার্স ব্যাংক। এর কারণ খুঁজতে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্তব্যাংকের কার্যক্রমের ওপর যে নিরীক্ষা চালায় তাতে ব্যাংকটির নির্বাহী চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক ওরফে বাবুল চিশতির লুটপাটে তথ্য উঠে আসে। ডুবতে বসা ফারমার্স ব্যাংক চালু রাখতে ২০১৮ সালে এর ৬০ ভাগ শেয়ার কেনে রাষ্ট্রায়াত্ত্ব চারটি ব্যাংক।

এই লুটপাটের তদন্তে নেমে দুদক বাবুল চিশতির প্রায় ৫শ’ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদের হদিস পায়। ১২টি মামলা করে বাবুল চিশতি ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। এবার বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে ফারমার্স ব্যাংকের মতিঝিল এবং গুলশান শাখা থেকে বাবুল চিশতি ৫০টি প্রতিষ্ঠানে ভুয়া ঋণ দিয়ে ১৮শ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। বাবুল চিশতি এসব প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়ে আবার সেই টাকা নিজের একাউন্টে স্থানান্তর করে নেন।

এদিকে মাহবুবুল হক চিশতির ভাই মাজেদুল হক চিশতি ওরফে শামীম চিশতি বেসিক ব্যাংক থেকে তিনশ’ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে পালিয়ে গেছেন। একসময়ের ভালো ব্যাংকের দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত বেসিক ব্যাংকেরও পথে বসার উপক্রম বলে জানালেন ব্যাংটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আলম।

চিশতি পরিবারের কেবল দুই ভাই নয়, ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, শ্যালক, ভাগ্নেও জড়িত। দুদকের মামলায় মাহবুবুল আলম চিশতির ছেলেসহ চারজন বর্তমানে জেলে থাকলেও, তার স্ত্রী ও মেয়ে জামিনে রয়েছে।

এমজে/