আ'লীগ নেতাকে জেলে পাঠানোয় বিচারক বদলি

বিচারব্যবস্থায় সরকারের হস্তক্ষেপ স্পষ্ট হলো: আসক

বিচারব্যবস্থায় সরকারের হস্তক্ষেপ স্পষ্ট হলো: আসক

সাবেক সংসদ সদস্য ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের জামিন না দেওয়ার ঘটনায় পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ আবদুল মান্নানকে তাৎক্ষণিক বদলি ও ভারপ্রাপ্ত নতুন বিচারক দিয়ে তাদের জামিন দেওয়ার ঘটনার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিক্রিয়ায় সংস্থাটি বলেছে, ‘বিচারককে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহারের মাধ্যমে বিচারবিভাগের ওপর সরকারের প্রভাব সংক্রান্ত জনমনে যে ধারণা বা উদ্বেগ বিদ্যমান, তা আরও দৃঢ় হয়ে উঠলো।’

একইসঙ্গে এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মন্তব্যকে হতাশাজনক বলে প্রতিক্রিয়ায় উল্লেখ করেছে আসক।

আসকের পাঠানো বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পিরোজপুরের ঘটনা আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অন্যদিকে এ বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের মন্তব্য অত্যন্ত হতাশাজনক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ বা প্রশমিত করার জন্যই জেলা জজকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন। আবার তিনি মনে করছেন, এখানে আইনের শাসনের কোনও ব্যত্যয় হয়নি।

আসক মনে করে, এ ঘটনার মাধ্যমে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হলো, যার প্রভাব সুদূরপ্রসারী। মন্ত্রী বিচারকের আচরণ নিয়েও মন্তব্য করেছেন। বিচারককে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহারের মাধ্যমে বিচারবিভাগের ওপর সরকারের প্রভাব সংক্রান্ত জনমনে যে ধারণা বা উদ্বেগ বিদ্যমান রয়েছে, তা আরও দৃঢ় হয়ে উঠলো।

বিচারবিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করার দশক পার হলেও এখনও বিচারবিভাগ কতটুকু স্বাধীনতা ভোগ করতে পারছে, তা এ ঘটনায় আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে উল্লেখ করেছে আসক।

বিবৃতিতে আসক আরও বলে, কোনও ব্যক্তিই আইনের ঊর্ধ্বে নয়, সে যতই প্রভাবশালী হোক না কেন। তবে বিচারক অপসারণের মাধ্যমে দুর্নীতি, অপরাধ প্রবণতা, মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীদের মধ্যে এ বার্তা পৌঁছে যাবে−তারা আইনের ঊর্ধ্বে। বিচারবিভাগের ওপর জনগণের আস্থাহীনতা দেখা দিলে তা রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে চরম লজ্জার মধ্যে ফেলে দেবে। সরকারের উচিত এ ঘটনার একটি নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করে জড়িতদের চিহ্নিত করে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া, যাতে এমন দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর না ঘটে।

এমজে/