মোদিকে প্রতিহতের ঘোষণা প্রগতিশীল সংগঠনগুলোর

মোদিকে প্রতিহতের ঘোষণা প্রগতিশীল সংগঠনগুলোর

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমন যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নেতৃত্বাধীন প্রগতিশীল গণসংগঠনগুলো।

বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে প্রগতিশীল গণসংগঠনসমূহের ব্যানারে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এ ঘোষণা দেন বক্তারা।

সমাবেশে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহ-সভাপতি বদিউর রহমান বলেন, ‘৩০ লাখ মানুষের রক্তে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানের চার মূলনীতির স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবুরের জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে মোদির মতো একজন ফ্যাসিস্টকে আমন্ত্রণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, এরকম সাংঘর্ষিক বিষয়ে সরকারের হাত দেয়া ঠিক হয়নি। কোনোভাবে এর সঙ্গে আপস করা যায় না।’

তিনি বলেন, ‘এই মোদি হিন্দু জামাতের নেতা। সে ভারতের ধর্মান্ধদের নেতা। যে দেশের সংবিধানে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতার মতো মূলনীতি বিরাজমান, সে দেশে কীভাবে একজন সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি আগমন করে? আমরা আমাদের দেশের সংবিধানকে রক্ষা করতে এ ফ্যাসিস্ট মোদির বাংলাদেশে আগমন প্রতিহত করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতে যারা মরছে তারা মুসলিম বা হিন্দু নয়। তারা হচ্ছে মানুষ। ভারতকে অতিদ্রুত এই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বন্ধ করতে হবে।’

বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক সাজিদুল হক রুবেল বলেন, ‘আমাদের এ আন্দোলন নিয়ে সরকার মশকরা করছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের দোহাই দিচ্ছে। জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। আমরা বলতে চাই, এ ভারত একাত্তরের ভারত নয়। শাসক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ভারতের চরিত্র বদলে যায়।’

সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘মোদিকে নিয়ে কেন আপনারা এত বেপরোয়া সেটা কিন্তু জনগণ বোঝে। ওবায়দুল কাদের তথা আওয়ামী লীগ সরকারের পায়ের তলায় আজ মাটি নেই। পায়ের তলার মাটি হচ্ছে জনগণ। সেই জনগণের ভোট ও ম্যান্ডেট ছড়াই আপনারা অপশক্তির জোরে ক্ষমতায় এখনও অধিষ্ঠিত আছেন। এর মধ্যে অন্যতম জোর হচ্ছে- সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্র এবং বিদেশি প্রভু। আর এ বিদেশি প্রভু হলো ভারত। আজকে সেই প্রভু বাংলার মাটিতে নামবে, তার বিরুদ্ধে আপনারা কথা বলতে পারছেন না, আপনারা আজ নতজানু।’

গণতান্ত্রিক আইনজীবী পরিষদের সদস্য হাসান তারিক চৌধুরী বলেন, ‘এ আমন্ত্রণ রাষ্ট্রের জন্মকে অস্বীকার করে, সংবিধানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে। সংবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যখন ফ্যাসিস্ট নরেন্দ্র মোদি আসছে, বিচার বিভাগ তখন নীরব। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সঙ্গে মোদির আদর্শের কোনো মিল নেই। মোদির আদর্শ হিটলারের আদর্শ। এ মোদি ভারতে ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চায়। বাংলাদেশে এরকম সাম্প্রদায়িক নেতার আগমন আমরা মেনে নিতে পারি না।’

প্রগতিশীল গণসংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল- বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ও ট্রেড ইউনিয়ন সেন্টার (টিইউসি), ইঞ্জিনিয়ার অ্যান্ড আর্কিটেকচার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ও গণতান্ত্রিক আইনজীবী পরিষদ।

এছাড়া সমাবেশে বক্তব্য দেন- পরিবহন শ্রমিক নেতা হযরত আলী, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি লিটন নন্দী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন- ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিক রায়।

এমজে/