‘পিপিই ক্রয় করতে সরকারের ১৭৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে’

‘পিপিই ক্রয় করতে সরকারের ১৭৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে’ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিএমএসডি’র পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। ছবি: ফেসবুক লাইভ থেকে নেওয়া

স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যসচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নাম জড়িয়ে মাস্কজনিত যে খবর প্রচার করা হচ্ছে তা বিভ্রান্তিকর, বানোয়াট এবং অসত্য বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিএমএসডি’র পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। এ সময় তিনি বলেন, পিপিই ক্রয় করতে সরকারের আনুমানিক ১৭৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।

সার্জিক্যাল মাস্ক, গ্লাভস, হেড কভার ইত্যাদিসহ প্রতিদিন প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার পিপিই সারা দেশের স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য বিতরণ করা হয় জানিয়ে ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘সর্বমোট ১৪ লাখ ৬৭ হাজার পিপিই ক্রয় করতে সরকারের আনুমানিক ১৭৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। প্রতিদিন পিপিই বিতরণে প্রায় সাত থেকে আট কোটি টাকা খরচ হচ্ছে।’

সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দৈনন্দিন স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

কোনো সরবরাহকৃত পণ্যের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠলে সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদক প্রতিষ্ঠানে ফেরত প্রদান করা হয় এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশীয় কোনো এক কোম্পানির মাস্ক নিয়ে বিভ্রান্ত, বানোয়াট এবং অসত্য তথ্য আমাদের মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যসচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে জড়িয়ে প্রকাশ হচ্ছে। আমরা এর আগে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রেস রিলিজ দিয়েছি এ ধরনের সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার জন্য। এ ধরনের অসত্য তথ্য যদি কেউ প্রকাশ করে থাকেন আমরা তাদের বিরুদ্ধে তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

সিএমএসডির কারিগরি কমিটি যথাযথভাবে পরীক্ষার পরই বিভিন্ন সামগ্রী হস্তান্তর করে থাকে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি অনুরোধ জানাবো কোনো বিষয়ে, বিশেষ করে মাস্ক বিষয়ে, কোনো বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে সরাসরি আমাদের ইমেইলে বা নাম্বারে যোগাযোগ করুন। আমরা নিশ্চই সেগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’

এন ৯৫ মাস্ক বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠান তৈরি করে না এবং এর সমমানের প্রায় এক লাখ মাস্ক মজুদ আছে জানিয়ে ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘এন ৯৫ মাস্ক সহজলভ্য না। আমাদেরকে এটার জন্য আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়।’

তিনি বলেন ‘মাস্কের মান নির্ধারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি কমিটি রয়েছে। কমিটি মাস্কের মান নির্ধারণের পরই আমরা মাস্কগুলো ক্রয় করে থাকি। যার কারণে এগুলো নিয়ে কোনো ধরনের সন্দেহ থাকার অবকাশ নেই।’

‘মাস্ক নিয়ে একটি তথ্য বিভ্রাট ও বিভ্রান্তিমূলক খবর ছাপানোর পর এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসার পর আমি এখানে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম যে এন ৯৫ মাস্ক দেশীয় কোনো প্রতিষ্ঠান তৈরি করে না। আমি আরো বলেছি, আমাদের দেশে যারা ওষুধ প্রস্তুত করেন, সেগুলোর দাম ও মান নিয়ন্ত্রণ করে থাকে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এখানে সিএমএসডির পক্ষ থেকে কোনো জিনিস অতিরিক্ত দাম দিয়ে ক্রয় করারও সুযোগ নেই এবং মান নিয়ন্ত্রনবিহীন কোনো মাস্ক ক্রয়পূর্বক সরবরাহেরও সুযোগ নেই-’বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মজুদে থাকা পিপিইর ৭০ ভাগই দেশীয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের তৈরি যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদিত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে আইসিইউতে কর্মরত, বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসার সঙ্গে সংযুক্ত, স্ক্রিনিংয়ের সঙ্গে জড়িত এবং অন্যান্য প্রশাসনিক জনবলের জন্য আমরা পিপিই মজুত করছি। এছাড়াও আমরা পিপিই সরবরাহ করছি দেশের প্রতিটি পিসিআর ল্যাবে। এছাড়াও যারা মাঠ পর্যায়ে নমুনা সংগ্রহ করছেন তাদের।’