‘আশ্রয়কেন্দ্রে গেলে শুধু ছবি তোলে, কিচ্ছু পাই না’

‘আশ্রয়কেন্দ্রে গেলে শুধু ছবি তোলে, কিচ্ছু পাই না’

‘আশ্রয়কেন্দ্রে গেলে করোনার ভয়, সেজন্য যাইনি। মরলে বাড়িতে মারা যাবো। আশ্রয়কেন্দ্রে গেলে সেখানে শুধু ছবি তোলে, সরকারকে দেখায়, সরকার থেকে বস্তায় বস্তায় চাল, ডাল, টাকা আনে। আমরা কিচ্ছু পাই না। সেজন্য এ বছর যাইনি। এর আগেও বহুবার গিয়েছি, কিছু পাইনি।’

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের নদী ভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা তাজুল ইসলাম আক্ষেপ করে এসব কথা বলেন।

সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নে আজ বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার তাড়া নেই। প্রতিদিনের মতো চায়ের দোকান, গরু-মহিষ পালন, স্বাভাবিক কাজেই ব্যস্ত তারা। শুধুমাত্র এ ইউনিয়নের জেলে পাড়ার অবস্থাটা কিছুটা ভিন্ন। জেলেরা মাছ শিকার করতে নদীতে নামেনি। পাড়ার চায়ের দোকানে বসে অলস সময় পার করছে।

কিরণ জলদাস নামে এক জেলে বলেন, ‘আজ আমরা নদীতে নামিনি। নদীতে ৯ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত চলছে সেজন্য।’

আশ্রয় কেন্দ্রে কেন যাননি, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখনো যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।’

এদিকে উপজেলা প্রশাসনের দাবি, প্রায় দেড় হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে।

বাস্তবে গিয়ে দেখা গেছে, আশ্রয়কেন্দ্রগুলো মানুষ শূন্য। চরচান্দিয়া ইউনিয়নের আজিজুল হক মায়মুনা উচ্চ বিদ্যালয় ও জেলে পাড়ার আশ্রয়কেন্দ্রেও দেখা গেছে নীরবতা।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বিকেল ৩টা পর্যন্ত উপজেলার সবকটি আশ্রয়কেন্দ্র মানুষশূন্য।

স্থানীয়রা জানান, চরচান্দিয়া ইউনিয়নে গতকাল রাতে ১৫-২০ জনকে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা তাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসলেও চিড়া, মুড়ি, গুড় খেতে দিয়েছে। রান্না করা খাবার না দেওয়ায় সেহেরির সময় বাড়িতে চলে গেছে। ৪৩টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ২৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ৬৮টি কেন্দ্রের সবগুলোই ফাঁকা। আশ্রয়কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য অনিয়মকেই দুষছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের এমন অভিযোগ সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অজিত দেব। তিনি জানান, মূলত তারা ঘর-বাড়ি ছেড়ে আসতে চাচ্ছে না বলে অজুহাত দেখাচ্ছে। জেলা প্রশাসন ৫০ মেট্রিকটন চাল ও নগদ সাড়ে ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৫টি মেডিকেল টিম। মাঠে কাজ করছে দেড় হাজার স্বেচ্ছাসেবক।