চৌগাছায় ভোয়াখালী খালে

কী প্রয়োজন সড়ক বিহীন এই কালভার্টের?

কী প্রয়োজন সড়ক বিহীন এই কালভার্টের?

২০১৯-২০ অর্থ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিবি) আওতায় যশোরের চৌগাছা উপজেলার পাতিবিলা ইউনিয়নের হায়াতপুর গ্রামে ভোয়াখালী নামে একটি শুকনো খালের উপর অপ্রয়োজনীয়ভাবে সড়কবিহীন ১ মিটার প্রস্থ ও ৫মিটার দৈর্ঘ্যের একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে ২ লাখ টাকা। কালভার্টটি যে স্থানে করা হয়েছে, তার দুপাশে অস্তিত্ব নেই কোনো সড়কের। কী প্রয়োজন সড়কবিহীন এই কালভার্টের...তার কোনো উত্তর নেই উপজেলা প্রকৌশলী বা উপসহকারী প্রকৌশলীর কাছে।

অপরদিকে কালভার্টটির মাত্র ২০/২৫ ফুট দূরেই খালটির উপর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি ব্রিজ রয়েছে। রয়েছে প্রশস্ত রাস্তা। নতুন করে নির্মিত কালভার্টটির দুপাশে মাটি ভরাট না করায় এটি স্থানীয়দের কোনো কাজেই লাগছে না। অযথা অর্থ খরচ করে অকাজের একটি স্থাপনার বিষয়টি ধাতে মেলেনি গ্রামবাসীর। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

স্থানীয় পাতিবিলা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, ‘স্থানীয় কৃষকদের ফসলাদি বাড়ি নেওয়ার জন্য ভোয়াখালী খালের উপর একটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য আমরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সুপারিশ করি। পরে উপজেলা পরিষদ থেকে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে সেখানে একটি কালভার্ট তৈরি করা হয়। কিন্তু কালভার্টের কোনো পাশেই মাটি ভরাট করা হয়নি। এটি কৃষকের কোনো উপকারেই আসছে না।’

এদিকে খালটির দুই পাশেই রাস্তা আছে দাবি করে পাতিবিলা ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান লাল বলেন, ‘কৃষকদের সুবিধার কথা চিন্তা করেই ওই স্থানে একটি কালভার্ট নির্মাণে জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়। সে মোতাবেক উপজেলা পরিষদ থেকে কালভার্ট নির্মাণ হয়। মাটি ভরাট করা হবে।’

জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিবি) আওতায় উপজেলার বিভিন্ন প্রকল্পে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলীর নেতৃত্বে উপসহকারী প্রকৌশলীরা ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজোশ করে এসব প্রকল্পগুলি নামকাওয়াস্তে শেষ করে টাকা তুলে নিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মতিন বলেন, ‘পাতিবিলা ইউনিয়ন পরিষদের চাহিদার বিপরীতে ব্রিজটিসহ আরও দুটি প্রকল্পে ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কালভার্টটি দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুল বারীকে। তিনি সঠিক তথ্য দিতে পারবেন।’

উপসহকারী প্রকৌশলী অব্দুল বারীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আপনারা সবসময় লেগে থাকলে তো উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করা সম্ভব হবে না। বিষয়টি অফিস সহকারীর কাছ থেকে জেনে নেন।’

জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশল অফিসের অফিস সহকারীরা বলেন, আমরা তো এসব প্রকল্পের সব তথ্য-উপাত্ত দিতে পারবো না। এসব ফাইলগুলো উপসহকারী প্রকৌশলীরাই সংরক্ষণ করেন। তারাই এসব তথ্য ভালোভাবে দিতে পারবেন।