পাবনায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম

পাবনায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম

পাবনার সুজানগর উপজেলার আহমেদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে হত্যাচেষ্টার রেশ কাটতে না কাটতেই জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শামিম হাসানকে কুপিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা।

বৃহস্পতিবার রাত দশটার দিকে জেলার সুজানগর বাজারস্থ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিনুজ্জামান শাহিনের ব্যক্তিগত কার্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

আহত শামিম সুজানগর উপজেলার তাতিবন্ধ ইউনিয়নের কামারদুলিয়া গ্রামের আব্দুল হাই মধার ছেলে। সে বর্তমানে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বদরুদ্দোজা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ধরনের ঘটনা আমি শুনেছি, তবে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা ছাত্রলীগে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে আহত ছাত্রলীগ নেতা শামিম হাসান বলেন, আমি সুজানগর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করার জন্যে একটি পক্ষ আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। তারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালায়। হামলার সময় সুজানগর পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম শোহাগ, সুজানগর এন এ কলেজ ছাত্রলীগ শাখার সভাপতি রেদওয়ান নয়ন, উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি রবিন হাসান সম্রাট, মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক এসএম ইমনসহ ১০/১২ জন চাপাতি ও দেশীয় অস্ত্রসহ সশস্ত্র অবস্থায় ছিল। হামলাকারীরা এলোপাথারীভাবে কুপিয়ে জখম করার পর অচেতন ভাবে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন আমাকে উদ্ধার করে প্রথমে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকরা অবস্থা খারাপ দেখে দ্রুত পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

তিনি আরও জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার ভাই ভাতিজারাই সুজানগরে মাদক ব্যবসা, শালিস বাণিজ্য, নারী কেলেঙ্কারি, ছিনতাই, সিএনজি অটোরিক্সা স্ট্যান্ডে চাঁদাদাবাজী থেকে শুরু করে এমন কোন অপকর্ম নেই যে তারা বা তার পরিবার করেন না। ওই পরিবার কখনোই সুজানগরে সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হোক তা চান না। এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করার কারনেও তারা আমার উপর ক্ষিপ্ত হন।

এ বিষয়ে আহত ছাত্রলীগ নেতার পিতা আব্দুল হাই মধা মুঠোফোনে জানান, আমার ছেলের অবস্থা খুবই খারাপ। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় আমার ছেলেকে হত্যার চেষ্টা করেন। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। এই ঘটনার জন্যে আমি প্রশাসনের নিকট নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবী করছি।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাজনৈতিক কোন্দলের জের ধরে সুজানগর উপজেলার আহমেদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেনের উপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। গুরুতর অবস্থায় সে বর্তমানে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সুজানগরে আওয়ামীলীগের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আছে। এক পক্ষে নেতৃত্বে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব ও অপরপক্ষে রয়েছে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিন।

এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিন বলেন, এই ঘটনাটি আমি শুনেছি, তবে যারাই কাজটি করেছেন তারা খুবই অন্যায় করেছেন। তবে আমার কোন লোকজন এই ঘটনার সাথে জড়িত নয়।

এমজে/