খুলনায় গুলির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪

খুলনায় গুলির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪

খুলনায় গুলি ও গণপিটুনিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪ জনে দাঁড়িয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনার সময় মারা যান আটরা গিলাতলার মশিয়ালী এলাকার মৃত মো. বারিক শেখের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম (৬০) ও একই এলাকার মো. ইউনুচ আলীর ছেলে গোলাম রসুল (৩০)।

মহানগরীর খান জাহান আলী থানার মশিয়ালীর ইস্টার্ন গেটে গুলির এ ঘটনা ঘটে। এ সময়ে গুলিবিদ্ধ হন মো. সাইফুল ইসলাম, আফসার শেখ, শামীম, রবি, খলিলুর রহমান ও মশিয়ার রহমানসহ আরও কয়েকজন।

শহীদুল ইসলামের ছেলে গুলিবিদ্ধ সাইফুল ইসলাম (২২) বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) দিনগত রাত ১২ টা ২০ মিনিটে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থার মারা যান। এছাড়া রাত ২টার দিকে গুলির ঘটনাকে কেন্দ্র করে জিহাদ শেখ (৩০) নামের এক যুবককে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলেন উত্তেজিত এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার খানজাহান আলী থানা পুলিশকে অস্ত্রসহ মুজিবর নামের এক ব্যক্তিকে ধরিয়ে দেন জাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের নেতা জাকারিয়া ও তার ভাই খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের নেতা জাফরিন। মুজিবরকে গ্রেফতারের বিষয়ে এলাকাবাসী জাকারিয়াকে জিজ্ঞাসা করতে যায়। ওই বাড়ির সামনে যাওয়ার পর কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে জাকারিয়া ও জাফরিন স্থানীয়দের ওপর গুলিবর্ষণ করেন। এ থেকে সংঘর্ষের ঘটনার সূত্রপাত হয়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হলেও গুরুতর আহত অবস্থায় নজরুল ও রসুলকে ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তবে কেউ কেউ বলছেন, মশিয়ালী আলিয়া মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনে খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক মো. জাকারিয়া সভাপতি পদে পরাজিত হন। এ ঘটনার জের ধরে স্থানীয়দের সঙ্গে তার বিরোধের সূত্রপাত হয়। ঘটনাস্থলে তিনি ও তার ছোট ভাই জাফরিন এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন। একপর্যায়ে স্থানীয় মসজিদের মাইকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে দেওয়ার ঘটনাটি ঘোষণা দেয়। এঘটনার পর স্থানীয়রা দফায়-দফায় বিক্ষোভ করে। পরে স্থানীয়রা আওয়ামী লীগ নেতা জাকারিয়া, জাফরিন, কবির ও মিল্টন এ চার ভাইয়ের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ১০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এসময় ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও ওই এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়নি ক্ষীপ্ত এলাকাবাসী। উত্তেজিত হয়ে রাত ২টার দিকে জাকারিয়ার লোক মোকসেদ আলীর ছেলে জিহাদ শেখকে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলেন।

খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বিক্ষুব্ধরা আগুন দিয়েছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ শান্ত। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। নিহতদের মরদেহ খুলনা মেডিক্যার কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।

শুক্রবার সকালে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) কানাই লাল সরকার জানান, মশিয়ালীতে গুলির ঘটনায় মোট চারজন নিহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি।

এমজে/