অর্থ চুরির ঘটনা ক্ষমা করেও জীবন গেল ফাহিমের

অর্থ চুরির ঘটনা ক্ষমা করেও জীবন গেল ফাহিমের

রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওয়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ’র এক লাখ ডলার চুরি করেও ক্ষমা পেয়েছিল তার ব্যক্তিগত সহকারী। তারপরও নিজের জীবন রক্ষা করতে পারেননি সেই সন্দেহভাজন খুনির হাত থেকে। ব্যক্তিগত সহকারী থাকা অবস্থায় প্রায় এক লাখ ডলার চুরি করেছিল সন্দেহভাজন খুনি টাইরেস ডেঁভো হ্যাসপিল (২১)।

এ ঘটনায় ফাহিম কোনো আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে হ্যাসপিলকে কিস্তিতে টাকা ফেরত দেওয়ার পথ বাতলে দিয়েছিলেন। নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনা সম্পর্কে অবগত ৩ জন কর্মকর্তা তাদের জানিয়েছেন, মোটামুটি ৯০ হাজার ডলার চুরি করেছিল হ্যাসপিল। ফাহিম তাকে নিজের প্রতিষ্ঠান থেকে বরখাস্ত করেছিলেন। তবে তার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ করেননি। বরং হ্যাসপিল যেন কিস্তিতে টাকাটা ফেরত দিতে পারে, তার পথও বাতলে দিতে চেয়েছিলেন তিনি।

ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে পুলিশ সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, গোয়েন্দারা ফাহিমের ফোনে পাওয়া একটা টেক্সট মেসেজে এই টাকা চুরির ব্যাপারটি সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর হ্যাসপিলের ওপর নজরদারি শুরু করে।

শুক্রবার (১৭ জুলাই) ফাহিমকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় তার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী হ্যাসপিলকে। একইদিনে তার বিরুদ্ধে সেকেন্ড ডিগ্রি মার্ডারের অভিযোগ দায়ের করা হয়।

এক সংবাদ সম্মেলনে নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের প্রধান ডিটেকটিভ রোডনি হ্যারিসন সাংবাদিকদের বলেন, ফাহিমের অর্থনৈতিক ও ব্যক্তিগত বিষয়গুলো তদারকি করতো হ্যাসপিল।

যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকালে ম্যানহাটানের লোয়্যার ইস্ট সাইডে ৩৩ বছর বয়সী ফাহিমের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তার খণ্ড-বিখণ্ড লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুরো শরীর কেটে ফেলার আগে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করা হয় বাংলাদেশি রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম পাঠাও’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহকে। তার শরীরে বেশ কয়েকটি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মূলত ঘাড় ও কাঁধে ছোরার আঘাতে ফাহিমের মৃত্যু হয়।

বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের (এনওয়াইপিডি) করা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। শহরের চিফ মেডিকেল এক্সামিনারের কার্যালয় থেকে দেওয়া ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এক পুলিশ সদস্য জানান, এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ফাহিমকে আগে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করা হয়। তার শরীরে বেশ কয়েকটি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ঘাড় ও কাঁধে ছুরি মারায় তার মৃত্যু হয়। নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে কেটে টুকরো টুকরো করা হয়।