টাস্কফোর্সের জরিপে সাগর চুরির চিত্র

টাস্কফোর্সের জরিপে সাগর চুরির চিত্র

কালনার হাওরের বাঁধের একটি অংশ মেরামতে মাটির কাজে ব্যয় হওয়ার কথা ২ লাখ ৯ হাজার টাকা। সেখানে খরচ বাড়িয়ে ব্যয় ধরা হয় ১৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ পাউবোর টাস্কফোর্সের হিসাবে ৫০৪ পার্সেন্ট মাটির কাজ বেশি ধরে বিল করা হয়। ইঞ্জিনিয়ারিং ভাষায় এটিকে বলা হয় ভেরিয়েশন।

সুনামগঞ্জের পিআইসিকে (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) সামনে রেখে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এভাবেই সরকারের কোটি কোটি টাকা লোপাটের আয়োজন করেছেন। ব্যয় বাড়াতে গঠন করা হয়েছে ৭৪৫ পিআইসি। জেলার ছোট-বড় ১১টি হাওর ঘুরে সরকারি টাকা লোপাটের ভয়াবহ এই চিত্র তুলে ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) টাস্কফোর্স। বিষয়টি এখন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও পাউবোর দুই নির্বাহী প্রকৌশলীর মতামতসহ প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।

টাস্কফোর্সের গোপন ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘জেলার বরাম হাওর, কাঁচিভাঙা হাওর, নাইন্দার হাওর, নলুয়ার হাওর এবং ডেকার হাওর রক্ষা বাঁধে ক্লোজিংসহ প্রি-ওয়ার্ক জরিপ (প্রকল্প গ্রহণের আগের জরিপ) কাজেও ব্যাপক গরমিল পাওয়া যায়। যার সর্বোচ্চ তারতম্য ছিল ১২১ দশমিক ২৫ পার্সেন্ট ঊর্ধ্বে, যা প্রতিবেদন আকারে প্রেরণ করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় পোস্ট ওয়ার্ক (কাজ শেষ হওয়ার পর জরিপ) জরিপেও যার ব্যাপ্তি বিশাল আকার ধারণ করে এবং সর্বোচ্চ তারতম্যের পরিমাণ পরিলক্ষিত হয় ৫০৪ দশমিক ৭০ পার্সেন্ট।’

জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘প্রকৃত মেজারমেন্ট ছাড়া আর কোনো পিআইসিকে বিল দেয়া হবে না। এটা নিশ্চিত। আমরা কোনোক্রমেই হিসাবের বাইরে সরকারের টাকা খরচ করতে পারি না। আমরা মাঠপর্যায় থেকে রিপোর্ট নিচ্ছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা ভেরিয়েশনে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে এর আগে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, এটা ঠিক। তবে এখন যাতে ব্যবস্থা নেয়া হয়, সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। এরা একজনও ছাড় পাবে না। মন্ত্রণালয় থেকেও আমরা এ বিষয়ে নির্দেশনা পেয়েছি। এই ভেরিয়েশনটা কেন- এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। তাদের ব্যাখ্যাটা আসার পর সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ সদরের এমপি ও জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় হুইপ পীর ফজলুর রহমান মিজবাহ বলেন, ‘টাস্কফোর্সের জরিপে যদি বাস্তব চিত্র উঠে আসে, তাহলে হাওর রক্ষা বাঁধের বিল দেয়ার ক্ষেত্রে যেন তা বিবেচনায় নেয়া হয়। এত দীর্ঘ ভেরিয়েশন করে সরকারের বিপুল টাকা লোপাটের চিন্তা যারা করেন, তাদের বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তা না হলে ভবিষ্যতে উদ্দেশ্যমূলক ভেরিয়েশনের এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’

এ সংক্রান্ত নথিপত্র থেকে জানা যায়, সুনামগঞ্জে ছোট-বড় ৫২টি হাওর রয়েছে। এসব হাওরে উৎপাদিত একমাত্র বোরো ফসল রক্ষায় ৭৪৫টি স্কিমের বিপরীতে পিআইসি গঠন করা হয়। এই পিআইসি সদস্যরাই ৬৩৬ কিমি. হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও পুনঃমেরামত করার দায়িত্ব পান। প্রাথমিকভাবে বরাদ্দ হয় ৬৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পাউবোর উপসহকারী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে প্রতিটি উপজেলায় অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ করার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এই বরাদ্দ ১২৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। এই ধারাবাহিকতায় সংশ্লিষ্ট পিআইসিকে ৮২ কোটি ৮৮ লাখ ৮৬ হাজার টাকা ছাড়করণ করা হয়েছে।

এমতাবস্থায় পিআইসিকে চূড়ান্ত বিল প্রদানে ২০ কোটি ৬ লাখ ৫ হাজার টাকা জরুরি ভিত্তিতে অবমুক্তকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ। এর আগেই পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পাউবোর টাস্কফোর্স নিয়মানুযায়ী তাদের গোপন জরিপে নামে হাওর এলাকায়। এ সময় তারা গুরুত্বপূর্ণ ১৯টি বাঁধ সংস্কার ও নির্মাণের বিষয়ে খোঁজ করতে গিয়ে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসে।

বাঁধের বাস্তব চিত্র : জেলার দোয়ারাবাজারে অবস্থিত কালনার হাওরের একটি অংশে গঠিত ২৫নং পিআইসির অনুকূলে ৩ হাজার ৫২৫ দশমিক ৮৪ ঘনমিটার মাটি কাটার বিল ধরা হয়েছে। বাস্তবে এই বাঁধ পরিদর্শন করে টাস্কফোর্স ৫৮৩ দশমিক ৭ ঘনমিটার মাটির প্রয়োজনীয়তার কথা প্রকাশ করে। এই বাঁধটিতে ৫০৪ দশমিক ৭০ পার্সেন্ট ভেরিয়েশন করা হয়েছে বলে জানানো হয়। টাস্কফোর্সের হিসাবে এই বাঁধে ২ লাখ ৯ হাজার টাকা খরচ হওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে বরাদ্দ দেয়া হয় ১৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। চাঞ্চল্যকর তথ্য হল, সমাপ্ত বিল পরিশোধের নামে এই পিআইসিকে জেলা কমিটি এখন ১২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা দেয়ার সুপারিশ করেছে।

জগন্নাথপুরের নলুয়ার হাওরে ২৬নং পিআইসিকে ১ হাজার ৩৩৬ দশমিক ৯১ ঘনমিটার হিসাব করে বরাদ্দ দেয়া হয় ৮ লাখ ১ হাজার টাকা। টাস্কফোর্সের জরিপে এই বাঁধ মেরামতে মাটি লাগার কথা বলা হয়েছে ৬৮৬ দশমিক ৫২ ঘনমিটার। এই পিআইসিতে ৯৪ দশমিক ৭৪ পার্সেন্ট ভেরিয়েশন করার তথ্য দিয়েছে টাস্কফোর্স। টাস্কফোর্সের হিসাবে বরাদ্দ হওয়ার কথা ৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা। আর সমাপ্ত বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে ৬ লাখ ৩৯ হাজার টাকা পরিশোধের সুপারিশ করে জেলা কমিটি।

দিরাই উপজেলার চাপতির হাওর রক্ষায় একটি অংশে গঠিত ৮৫নং পিআইসিকে ৬ হাজার ২৮৬ দশমিক ২৯ ঘনমিটার মাটির প্রয়োজনীয়তার হিসাব করে বরাদ্দ ধরা হয় ১৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এই বাঁধে টাস্কফোর্সের হিসাবে আসে ৪ হাজার ৭৫৫ দশমিক ৩ ঘনমিটার মাটি। এই হিসাবে ১১ লাখ ২৮ হাজার টাকা বিল হওয়ার কথা। সর্বশেষ চূড়ান্ত বিল পরিশোধে জেলা কমিটি এখন সুপারিশ করেছে ১২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। এই পিআইসিতে ভেরিয়েশন করা হয়েছে ১১ দশমিক ৯৪ পার্সেন্ট। একই চাপতির হাওরের আরেকটি অংশে গঠিত ৮৫(ক) পিআইসিকে ৬ হাজার ২৮৬ দশমিক ৫৯ ঘনমিটার মাটির হিসাব ধরে বরাদ্দ দেয়া হয় ১৯ লাখ ৩১ হাজার টাকা।

এখানে টাস্কফোর্স জরিপ করে দেখেছে ৪ হাজার ২৭২ দশমিক ১৫ ঘনমিটার মাটি লাগার কথা। এই হিসাবে বরাদ্দ হওয়ার কথা ৭ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। এখানে ভেরিয়েশন করা হয়েছে ৪৭ দশমিক ১৫ পার্সেন্ট। চূড়ান্ত বিলে জেলা কমিটি এখন ১৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকা পরিশোধের সুপারিশ করেছে। চাপতির হাওরের ৮৬নং পিআইসিকে ৪ হাজার ৯২০ দশমিক ঘনমিটার মাটির হিসাব করে বরাদ্দ দেয়া হয় ২১ লাখ ১৩ হাজার টাকা। এখানে টাস্কফোর্স জরিপ করে ৩ হাজার ৫৯০ ঘনমিটার মাটির তথ্য দিয়েছে। এই হিসাবে বরাদ্দ হওয়ার কথা ৬ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। এই বাঁধে জেলা কমিটি এখন চূড়ান্ত বিলে সুপারিশ করেছে ১১ লাখ ১০ হাজার টাকা। এখানে ভেরিয়েশন করা হয় ৩৭ দশমিক ৫ পার্সেন্ট। দিরাই উপজেলার বরাম হাওরের একটি অংশে গঠিত ১নং পিআইসিকে ১৭৯৯ দশমিক ঘনমিটার মাটির হিসাব ধরে বরাদ্দ দেয় ২৩ লাখ ৪১ হাজার টাকা।

অন্যদিকে টাস্কফোর্স জরিপ করে বলেছে, এই বাঁধে লেগেছে ৭৯৩ দশমিক এক ঘনমিটার মাটি। এই হিসাবে বরাদ্দ হওয়ার কথা ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এখানে ভেরিয়েশন করা হয়েছে ১২৬ দশমিক ৯০ পার্সেন্ট। এরপরও এই বাঁধের চূড়ান্ত বিলে ১৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকা পরিশোধের সুপারিশ করে জেলা কমিটি। বরাম হাওরের আরেকটি অংশে গঠিত ৭নং পিআইসিকে ৪ হাজার ৬২৫ দশমিক ৬৫ ঘনমিটার মাটির হিসাব করে বরাদ্দ দেয়া হয় ২৪ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। টাস্কফোর্স জরিপ করে বলেছে, এখানে মাটি লাগার কথা ৩ হাজার ৬৭৮ দশমিক ৭ পার্সেন্ট, আর ২৫ দশমিক ৭৬ পার্সেন্ট ভেরিয়েশন করা হয়েছে। এছাড়া ভান্ডাবিল হাওর রক্ষায় গঠিত ২৫নং পিআইসিকে দেয়া হয় ১৫ লাখ ১৪ হাজার টাকা। টাস্কফোর্স বলছে, এখানে ভেরিয়েশন করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৭২ পার্সেন্ট। একই হাওরের ২৬নং পিআইসিকে দেয়া হয় ১৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। এই বাঁধে টাস্কফোর্স বলেছে, ভেরিয়েশন করা হয়েছে ১০ দশমিক ১৯ পার্সেন্ট। শাল্লা উপজেলার ছায়ার হাওর রক্ষায় গঠিত ৯০নং পিআইসিকে বরাদ্দ দেয়া হয় ২০ লাখ ২ হাজার টাকা। এখানে টাস্কফোর্স জরিপ করে বলেছে, ভেরিয়েশন করা হয়েছে ২৫ দশমিক ১৩ পার্সেন্ট। দক্ষিণ সুনামগঞ্জের খাই হাওর রক্ষায় গঠিত ৩৪নং পিআইসিকে বরাদ্দ দেয়া হয় ১৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা।

আর টাস্কফোর্স জরিপ করে বলেছে, এখানে ভেরিয়েশন করা হয়েছে ৪০ দশমিক ১৮ পার্সেন্ট। জামালগঞ্জের পাগনার হাওরের ২২নং পিআইসিকে বরাদ্দ দেয়া হয় ১৭ লাখ ৬১ হাজার টাকা। টাস্কফোর্স জরিপ করে বলেছে, এই বাঁধে ভেরিয়েশন করা হয়েছে ৪৬ দশমিক ৫৫ পার্সেন্ট। ধর্মপাশা উপজেলার চন্দ্রসোনার থাল হাওর রক্ষায় গঠিত ১৩৩নং পিআইসিকে বরাদ্দ দেয়া হয় ১৬ লাখ ২৬ হাজার টাকা। টাস্কফোর্স জরিপ করে বলেছে, এখানে ভেরিয়েশন করা হয়েছে ৬৫ দশমিক ৯৬ পার্সেন্ট। দোয়ারাবাজারের কালনার হাওর রক্ষায় গঠিত ৮নং পিআইসিকে বরাদ্দ দেয়া হয় ২২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। টাস্কফোর্স জরিপ করে বলেছে, এখানে ভেরিয়েশন করা হয়েছে ১০২ দশমিক ৫৬ পার্সেন্ট।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জোয়ালভাঙা হাওর রক্ষায় গঠিত ৬নং পিআইসিকে দেয়া হয় ২৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা। টাস্কফোর্স বলছে, এখানে ভেরিয়েশন করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৬০ পার্সেন্ট। বিশ্বম্বরপুরের আঙ্গারুলী হাওর রক্ষায় গঠিত ৮নং পিআইসিকে ২১ লাখ ৪১ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। টাস্কফোর্স জরিপ করে বলেছে, এখানে ভেরিয়েশন করা হয়েছে ২৭ দশমিক ১২ পার্সেন্ট। তাহিরপুরের মাতিয়ান হাওর রক্ষায় গঠিত ৫২নং পিআইসিকে বরাদ্দ দেয়া হয় ২১ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। এখানে ভেরিয়েশন করা হয়েছে ৭৫ পার্সেন্ট। একই হাওরের ৫৩নং পিআইসিকে বরাদ্দ দেয়া হয় ১৬ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। টাস্কফোর্সের হিসাবে এখানে ভেরিয়েশন করা হয় ২৪ পার্সেন্ট। আর ৫৪নং পিআইসিকে বরাদ্দ দেয়া হয় ১৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। এখানে ১৩ পার্সেন্ট ভেরিয়েশনের তথ্য দিয়েছে টাস্কফোর্স।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, এভাবে মাটির হিসাব বাড়িয়ে প্রতিটি পিআইসিকে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ বিল বরাদ্দ দিয়ে সরকারি অর্থ লোপাটের সংস্থান রাখা হয়েছে। বাস্তবে টাস্কফোর্স যে জরিপ প্রতিবেদন দিয়েছে সেটিই সঠিক। তারা প্রকৃত চিত্র তুলে দিয়ে হাওরের দুর্নীতিবাজদের মুখোশ উন্মোচন করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান ভেরিয়েশনের মূল হোতা। তিনি যেখানে গেছেন সেখানেই কোটি কোটি টাকার প্রকল্পে নানা ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ চাউর হয়েছে। এর আগে সবিবুর রহমান কক্সবাজারে ছিলেন। চকরিয়ায় মাতামুহুরি নদীতীর সংরক্ষণ প্রকল্পে নিুমানের উপকরণ দিয়ে সিসি ব্লক তৈরির সুযোগ দেয়ার অভিযোগে তাকে সাসপেন্ড করা হয়। ৮ মাস পর তাকে শাস্তি না দিয়ে পাউবোর সাবেক মহাপরিচালক মাহফুজুর রহমান স্বপদে তাকে সুনামগঞ্জে বদলি করেন। এরপরই মূলত হাওর থেকে টাকা কমানোর ধান্ধায় নামেন এই কর্মকর্তা। ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে পাউবোর কিছু কর্মকর্তা এভাবে পানির মধ্যে লুটপাটের মহা আয়োজন করে থাকেন। চক্রটি প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় ধরে প্রাক্কলন তৈরি করে ভাগ বসান। এখন বেশির ভাগ প্রকল্পে ভেরিয়েশন করে দুর্নীতির এই সহজ পথ বেছে নেয়া হয়।

জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সঙ্গে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ উঠলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাধ্য হয়ে মুখ রক্ষার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। যথারীতি সমঝোতার ভিত্তিতে অলিখিত নির্দেশনা অনুযায়ী দায়সারা প্রতিবেদন দিয়ে তাদের গুরুদণ্ড থেকে রেহাই দেয়া হয়। শাস্তি বলতে নামসর্বস্ব ‘সতর্ক’।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পাউবোর শাখা কর্মকর্তারা মিলে এই পিআইসি প্রকল্পের প্রি-ওয়ার্ক করে থাকেন। এখানে সরাসরি আমাদের কোনো হাত থাকে না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একজন এসও’র সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পক্ষে পিআইও মেজারমেন্টে অংশ নিয়ে থাকেন। এছাড়া সুনামগঞ্জের দু’জন নির্বাহী প্রকৌশলী। ৫০৪ পার্সেন্ট ভেরিয়েশন আমার অংশে হয়নি।সূত্র : যুগান্তর

এমজে/