বন্যায় ৫০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত, ত্রাণ সরবরাহ প্রযোজনের তুলনায় অনেক কম: সিপিডি

বন্যায় ৫০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত, ত্রাণ সরবরাহ প্রযোজনের তুলনায় অনেক কম: সিপিডি

সাম্প্রতিক বন্যায় দেশের ৩৩ জেলার ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি দেশের মোট জনসংখ্যার ৭.১ শতাংশ। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় সরকার যে ত্রাণ সরবরাহ করছে তা প্রযোজনের তুলনায় অনেক কম। পাশাপাশি ত্রাণ বিতরণে স্বচ্ছতারও যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে ত্রাণ বিতরণে স্থানীয় বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে সরকারের সঙ্গে যুক্ত করা উচিত।

বুধবার বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) উদ্যোগে সিপিডি ভার্চুয়াল সংলাপ, ‘সাম্প্রতিক বন্যা: ক্ষয়ক্ষতি এবং করণীয়’ শীর্ষক সংলাপে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ক্ষয়ক্ষতি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এতে মূল প্রতিবেদন তুলে ধরেন সিপিডিরি সিনিয়র রিচার্স এসোসিয়েট কামরুজ্জামান।

সিপিডিরি প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের বন্যা ৩৫ দিনের বেশি সময় ধরে চলমান রযেছে। ফলে পুরো ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখনও পাওয়া যাযনি। তবে যতটুকু পাওয়া গেছে তাতে দেখা গেছে, ৪২ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ শস্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এছাড়া ৭৪.৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যের সমপরিমাণ গবাধিপশু, ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৪৯ হেক্টর কৃষিজমিও ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি ১৬ হাজার ৫৩৭ হেক্টার জমির গাছপালা, ৮১ হাজার ১৭৯টি টিউবওয়েল এবং ৭৩ হাজার ৩৪৩টি ল্যাটিন এবং ১ হাজার ৯০০ এর বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এবারের বন্যায় যে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে সেটা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এই ত্রাণ কার্যক্রমের পরিসর বাড়ানোর পাশাপাশি স্বচ্ছতা বাড়ানোও প্রয়োজন। ত্রাণ বিতরণের স্থানীয় এনজিওগুলোকে সংযুক্ত করার কথা প্রতিবেদনে বলা হয়।

সিপিডির সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুল রহমান। সিপিডি‘র নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের উপস্থাপনায় এতে সভাপতিত্ব করেন সিপিডি‘র চেয়ারমম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান। বক্তব্য দেন পানি সম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত, সিপিডির সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোতাহার হোসেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুল রহমান বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সহযোগিতায় সরকার সবধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। বন্যায় মানুষের মাঝে খাদ্য ও নগদ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া হেল্পলাইন খোলা হয়েছে, যাতে করে যেকোনো মানুষ প্রয়োজনে ত্রাণ সহায়তা পেতে পারেন। তিনি বলেন, বন্যায় ত্রাণ বিতরণে কোনো ধরনের অনিয়ম হচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষদের সবধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। কেউ ত্রাণ পাচ্ছে না- এই কথা মোটেও সঠিক না।