সেই ‘ইমাম মাহাদী’র বিরুদ্ধে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে মামলা

সেই ‘ইমাম মাহাদী’র বিরুদ্ধে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে মামলা

নিজেকে ইমাম মাহাদী দাবি করা সৌদি প্রবাসী সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। কথিত এই ইমাম মাহাদীর নাম মুস্তাক মুহাম্মদ আরমান খান।

শনিবার (২২ আগস্ট) রাজধানীর রমনা থানায় সিটিটিসির একজন পরিদর্শক বাদী হয়ে এই মামলাটি করেন। মামলায় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ধর্মীয় অপব্যাখ্যা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। সিটিটিসির উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সিটিটিসির কর্মকর্তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে মুস্তাক মুহাম্মদ খান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের অপব্যাখ্যামূলক মনগড়া ও ভিত্তিহীন বক্তব্য অডিও-ভিডিও আকারে বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল ও তাকওয়া অনলাইন টিভিতে প্রচার করে আসছিলেন। ওইসব ভিডিও বার্তায় তিনি নিজেকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বংশধর হিসেবে দাবি করেন। এছাড়া তিনি স্বপ্নের মাধ্যমে নিজেকে ইমাম মাহাদী হিসেবে ঘোষিত হওয়ার দাবিও করেন।

সিটিটিসির কর্মকর্তারা জানান, ইমাম মাহাদীর পরিচয় ধারণ করে এ ধরনের অসত্য বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য ও তথ্য-উপাত্ত প্রদানের ফলে দেশের ধর্মপ্রাণ বৃহত্তর মুসলিম জনগোষ্ঠী ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়াসহ ব্যাপক বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। কথিত এই ইমাম মাহাদী তার কাছে কথিত ‘বায়াত’ গ্রহণের জন্যও আহ্বান জানিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৪ মে ও ৭ মে ১৯ জন তরুণ কথিত এই ইমাম মাহাদীর কাছে বায়াত নিতে সৌদি যাচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয়।

এর আগে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্র ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরব গিয়ে তার অনুসারী হিসেবে যোগদান করে।

প্রাথমিক অনুসন্ধানের বরাত দিয়ে সিটিটিসির কর্মকর্তারা জানান, ২০০৬ সালে মুস্তাক মুহাম্মদ আরমান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। এরপর মালয়েশিয়া থেকে স্থাপত্যবিদ্যায় ডিগ্রি অর্জন করেন। কিন্তু প্রথাগত ক্যারিয়ারে অংশগ্রহণের পরিবর্তে তিনি ধর্মীয় ভাবধারায় দীক্ষা নেন। ২০১৬ সালে একবার উগান্ডা গিয়ে একমাস অবস্থান করেন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে অক্টোবর মাসে তিনি সৌদি আরব গিয়ে নিজেকে কথিত ইমাম মাহাদী হিসেবে ঘোষণা করেন।

সিটিটিসির উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা কথিত এই ইমাম মাহাদীর সম্পর্কে জানতে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করবো। একইসঙ্গে তার অপব্যাখ্যায় যেন বিভ্রান্ত হয়ে কোনও ধরণের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করতে না পারে সেজন্য আমরা সতর্ক রয়েছি।