ঢাবিতে শিক্ষার্থীরা ১২ টাকায় পড়ে, ইটস অ্যামেজিং, বললেন উপাচার্য

ঢাবিতে শিক্ষার্থীরা ১২ টাকায় পড়ে, ইটস অ্যামেজিং, বললেন উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০ হাজার। শিক্ষার্থীরা এখানে ১২ ও ১৫ টাকায় পড়াশোনা করেন। ইটস অ্যামেজিং, রেকর্ড। বিদেশি শিক্ষার্থীর অনুপাত ও বিদেশি শিক্ষকের অনুপাত কম হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য৷ ‘শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, এ আমার অহংকার-এখনই সময় দায় মোচনের’ শিরোনামে গত বুধবার সন্ধ্যায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপাচার্য বলেন, ‘ফরেন ডেলিগেটরা (বিদেশি প্রতিনিধি) এখানে এলে যখন উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক হয়, তখন আমি তাঁদের বলি আমাদের ৮৪টি বিভাগ, ১১টি ইনস্টিটিউট, প্রায় ৬০টি গবেষণাকেন্দ্র, ১৪০টি অধিভুক্ত ও উপাদানকল্প প্রতিষ্ঠান আছে। এগুলো শুনে তাঁরা অবাক হয়ে যান। তাঁরা বলেন, “ইটস আ হিউজ অ্যান্ড ম্যাসিভ ইউনিভার্সিটি।” আমাদের ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০ হাজার, শিক্ষার্থীরা ১২ টাকায়, ১৫ টাকায় পড়ে—ইটস অ্যামেজিং, রেকর্ড। এত শিক্ষকের বিদেশি ডিগ্রি আছে৷ এগুলো শুনে তাঁরা (বিদেশি প্রতিনিধি) বলেন, “এগুলো তো তোমাদের ওয়েবসাইটে দেখি না৷” ফলে তথ্যগুলো আপলোড-শেয়ারিং অত্যন্ত জরুরি৷ আমরা সেদিকে অ্যাটেনশন দিচ্ছি৷’

বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক র‌্যাঙ্কিংয়ের কথা উল্লেখ করে ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ের জন্য বছরব্যাপী বাজেট থাকে, তারা একটি তথ্যভান্ডার তৈরি করে। টাইমস হায়ার এডুকেশন, কিউএস র‌্যাঙ্কিংও আমাদের সঙ্গে অনেক সময় যোগাযোগ করে৷ এগুলোতে অংশগ্রহণের প্রয়োজন আছে৷ আমরা বিশ্বব্যাপী র‌্যাঙ্কিংয়ে ভালো অবস্থানে থাকলে এর একটি প্রভাব শিক্ষার্থীদের মনোভাবের ওপর পড়ে৷ অনেক সময় আমরা সেগুলোকে উপেক্ষা করতাম৷ এত দিন আমরা তথ্য দিইনি৷ আমরা বলতাম যে র‌্যাঙ্কিংয়ে অংশগ্রহণ করব না। তবে কয়েক বছর যাবৎ আমরা র‌্যাঙ্কিংয়ে অংশগ্রহণ করছি এবং একটু একটু তথ্য দিচ্ছি৷ তথ্য দেওয়ার বড় আকারের ঘাটতি আমাদের ছিল৷ তথ্যপ্রযুক্তির সম্পৃক্ততায় আমরা তুলনামূলক ট্র্যাডিশনালভাবে অগ্রসর হতাম৷ এখন সে বিষয়টিকে জোরদার করছি৷ আমাদের আইসিটি সেল সেটি করছে৷ এটি দুই বছর ধরে কার্যকর হয়েছে৷ ডেটা না থাকায় সংস্থাগুলো আমাদের মূল্যায়ন করতে পারত না৷ বিশ্ববিদ্যালয়কে অটোমেশনের আওতায় আনার কাজ চলছে৷ এটি হয়ে গেলে সমস্যাটি থাকবে না।’

র‌্যাঙ্কিং নিয়ে উপাচার্য আরও বলেন, ‘দুটো জায়গায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় আকারের ঘাটতি আছে৷ সেই নিরিখে যাঁরা ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটির সঙ্গে এনগেজড, তাঁরা সাহায্য করতে পারবেন৷ র‌্যাঙ্কিংয়ের দুটি প্যারামিটার হলো বিদেশি শিক্ষার্থীর অনুপাত ও বিদেশি শিক্ষকের অনুপাত৷ বিদেশি শিক্ষক আমাদের এখানে তুলনামূলক কম, সংখ্যায় মোট ২৫-৩০ জন হবেন৷ দিস ইজ নট এনাফ৷ আমাদের শিক্ষকেরা অনেক গবেষণা করেন, অনেকের হাই ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর জার্নালে প্রকাশনা আছে, যা খুবই প্রশংসনীয়৷ কিন্তু আমাদের ট্র্যাডিশনাল মাইন্ডসেটের কারণে তথ্যগুলো প্রকাশ হয় কম৷’

একটি মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রকে (টিএসসি) নতুন করে নির্মাণ করার কথা জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘১৯৬৪ সালে টিএসসি নির্মিত হয়েছিল৷ তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৮০০, শিক্ষকের সংখ্যা ছিল ২০০ থেকে কিছু বেশি৷ এটাকে বিবেচনায় রেখে এটুকু জায়গায় টিএসসির ভবন, মিলনায়তন ও ফ্যাসিলিটিজ তৈরি করা হয়েছিল৷ আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ হাজারের বেশি শিক্ষক আর ৪০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আছেন৷ কিন্তু টিএসসি আগের মতোই আছে৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সে জন্যই আমাদের এটা পুনর্বিন্যাস করার নির্দেশনা দিলেন৷’