প্রণোদনার ঋণ ৬০ কিস্তিতে দিতে চায় বিজিএমইএ

প্রণোদনার ঋণ ৬০ কিস্তিতে দিতে চায় বিজিএমইএ

প্রণোদনা ঋণের সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা ৫ বছরে পরিশোধ করতে চান তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকরা। শুধু তাই নয়, ৫ বছরে ৬০ কিস্তিতে এই অর্থ পরিশোধের জন্য তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এই আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধও করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ঋণের শর্তানুযায়ী এই অর্থ দুই বছরে ১৮ কিস্তিতে পরিশোধ করার কথা ছিল।

করোনা পরিস্থিতিতে দেশের প্রধান রফতানিমুখী খাত তৈরি পোশাক খাতের উৎপাদন ও রফতানি অব্যাহত রাখতে সচল কারখানাগুলোর শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানে প্রাথমিকভাবে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঋণ তহবিল ঘোষণা করে সরকার। এ ঘোষণার আলোকে গত ২ এপ্রিল একটি সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সার্কুলার অনুযায়ী, এ খাতে প্রদত্ত প্রণোদনা ঋণের গ্রেস পিরিয়ড হচ্ছে ছয় মাস এবং দুই বছরে ১৮টি কিস্তিতে এ ঋণ পরিশোধ করার কথা। এই অর্থ দিয়ে এপ্রিল-মে-জুন মাসের শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হয়। এরপর বিজিএমইএর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জুলাই মাসের বেতনও ঋণ হিসেবে প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে প্রদান করা হয়। এই অর্থের পরিমাণ ছিল প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতির কারণে ক্রেতাদের তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল, স্থগিত ও নির্দিষ্ট সময়ে পেমেন্ট না-পাওয়া ইত্যাদি কারণে প্রণোদনা ঋণ যথাসময়ে পরিশোধ করা সম্ভব হবে না বলে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। একই সাথে প্রণোদনা ঋণের গ্রেস পিরিয়ড ছয় মাসের পরিবর্তে এক বছর নির্ধারণ এবং দুই বছরে ১৮টি কিস্তির পরিবের্তে পাঁচ বছরে ৬০টি কিস্তিতে ঋণ পরিশোধের সুযোগ প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছে বিজিএমইএ।

সূত্র মতে, বিজিএমইএর আবেদনের প্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে তৈরি পোশাক মালিকদের এ প্রস্তাব মেনে নেয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে এ বিষয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য আমাদের জানানো হয়েছে। এখন বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। এ সপ্তাহের শেষে এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

উল্লেখ্য, এর আগে করোনাভাইরাসের কারণে সঙ্কটে পড়া এই খাতকে বাঁচাতে সরকারের পক্ষ থেকে এপ্রিল, মে ও জুন মাসের শ্রমিকদের বেতন বাবদ ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ প্রদান করা হয়। প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় এই ঋণের সার্ভিস চার্জ ছিল মাত্র ২ শতাংশ। কিন্তু গার্মেন্ট খাতের শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন দেয়ার জন্য এই অর্থ পর্যাপ্ত না থাকায় পরবর্তীতে আরো আড়াই হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এরপর বিজিএমএইর আবেদনের প্রেক্ষিতে জুলাই মাসেরও বেতন প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে দেয়া হয়। তবে এই ঋণের সার্ভিস চার্জ ছিল ৪ শতাংশ।

এমজে/