অবহেলায় দুই নবজাতকের মৃত্যু, লাশ নিয়ে আদালত চত্বরে বাবা

অবহেলায় দুই নবজাতকের মৃত্যু, লাশ নিয়ে আদালত চত্বরে বাবা

অসুস্থ জমজ নবজাতককে কেন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি তা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জানাতে তিন হাসপাতাল পরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই দুই নবজাতককে হাসপাতালে ভর্তি করতে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। হাসপাতাল তিনটি হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও মুগদা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল।

সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ নির্দেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

তিনি বলেন, ‘আজ (সোমবার) সকালে সুপ্রিম কোর্টের কর্মচারী আবুল কালামের স্ত্রী সায়েরা খাতুনকে হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি জমজ সন্তান প্রসব করেন। পরে ওই মা ও দুই নবজাতককে মুগদা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে বলা হয় এখানে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। সেখান থেকে নবজাতকদের শ্যামলীর ঢাকা শিশু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে দুই নবজাতককে অ্যাম্বুলেন্সে করে শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বলে তাদের আইসিইউ বেড খালি নেই। নরমাল বেডে ভর্তি করতে হবে। এজন্য দিনে প্রতি বাচ্চার জন্য ৫ হাজার করে টাকা লাগবে। এ সময় আবুল কালাম হাইকোর্টের এক বিচারপতির সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ করেন।

বিচারপতি তার নবজাতকদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে নিয়ে আসতে বলেন এবং পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নিয়ে আসেন এবং পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পরিচালকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা তাকে জানান পরিচালক মিটিংয়ে আছেন। পরে জানান পরিচালক বাসায় চলে গেছেন। এরপর পরিচালকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা একজন চিকিৎসককে দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে নবজাতকদের দেখান। তখন চিকিৎসক জানান, জমজ নবজাতক আর বেঁচে নেই। তারপর আবুল কালাম আজাদ অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদের মরদেহ আদালত চত্বরে নিয়ে আসেন। এরপর আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে উল্লিখিত আদেশ দেন।

এ সময় হাইকোর্ট অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, অসুস্থ জমজ নবজাতককে হাসপাতালে ভর্তি না করা অমানবিক। আগে চিকিৎসা তারপর টাকা। শিশু হাসপাতালে দরিদ্রদের জন্য ফান্ড থাকা সত্ত্বেও টাকা চাওয়া দুঃখজনক।