সাড়ে ৭ মাসে ফেরত এসেছেন পৌনে ৩ লাখ শ্রমিক

সাড়ে ৭ মাসে ফেরত এসেছেন পৌনে ৩ লাখ শ্রমিক

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কাজ হারিয়ে, কারাভোগ শেষে শ্রমিকদের দেশে ফেরত আসা এখনো অব্যাহত রয়েছে। গত সাড়ে সাত মাসে সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, দুবাইসহ ২৮টি দেশ থেকে পৌনে তিন লাখ শ্রমিক প্রায় নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরেছেন।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে দেশে ফেরত আসা কর্মীদের তালিকা গণমাধ্যমে পাঠালেও তাদের বিষয়ে নতুন করে কর্মসংস্থান তৈরি করা ছাড়াও সরকারিভাবে প্রণোদনার সুযোগ তাদের কতটুকু দেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে কিছু জানানো হচ্ছে না।

মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ১ এপ্রিল থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত মোট দুই লাখ ৭২ হাজার ১৮৫ জনেরও বেশি প্রবাসী কর্মী দেশে ফেরত এসেছেন। তাদের মধ্যে দুই লাখ ৪১ হাজার ১৫২ জন পুরুষ এবং ৩১ হাজার ৩৩ জন নারী।

ফেরত আসাদের মধ্যে দুই লাখ ৩৫ হাজার ৪০৪ জন বৈধ পাসপোর্টে এবং আউটপাসের মাধ্যমে ফিরেছেন ৩৬ হাজার ৭৮১ জন।

সূত্র জানায়, ফিরে আসা শ্রমিকদের বেশির ভাগই বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছেন প্রবাসে। এ ছাড়া করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে কাজ না থাকা, চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়া, প্রতারিত হওয়া এবং ভিসার মেয়াদ শেষ বা আকামা (কাজের অনুমতি) না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এসব শ্রমিকের সাথে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের কর্মকর্তারা কথা বলে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন বলে জানানো হয়।

ফেরত আসাদের মধ্যে বেশির ভাগ নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরে এসেছেন। এর মধ্যে সর্বোচ্চসংখ্যক ৭৬ হাজার ৯২২ কর্মী ফিরেছেন সৌদি আরব থেকেই।

গতকাল জনশক্তি প্রেরণকারী একজন বিশ্লেষক বলেন, দেশে ফেরার হার যেভাবে প্রতিনিয়ত বাড়ছে সেভাবে কিন্তু দেশ থেকে বিদেশে কর্র্মী যাচ্ছে না। এতে দেশে বেকারত্ব বাড়ছে। সরকারের উচিত কূটনৈতিকভাবে তৎপরতা বাড়িয়ে দেশে ফেরত আসা শ্রমিকের সংখ্যা কমিয়ে আনা। এ ক্ষেত্রে বিদেশের মিশনগুলোতে দায়িত্বরত শ্রম উইংয়ের কর্মকর্তাদের আরো তৎপর হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

গতকাল রাতে জনশক্তি প্রেরণকারী সংগঠন বায়রার মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান দেশে ফেরত আসা শ্রমিক প্রসঙ্গে বলেন, বিদেশ থেকে লোক তো ফেরত আসবেই। কারণ গত সাত-আট মাস ধরে কর্মীরা ছুটিতে আসছে না। এখন রেগুলার ফ্লাইট শুরু হয়েছে। শ্রমিকের চাকরির কন্ট্রাক্ট শেষ হয়েছে। সেই হিসাবে ফেরত আসাটাই স্বাভাবিক। একদল ফেরত আসে যাদের চাকরি শেষ হয়ে গেছে, এক দল ফেরত আসে যারা ছুটিতে আসছে, এক দল ফেরত আসে যাদের কন্ট্রাক্ট শেষ হয়ে গেছে, আর আরেক দল ফেরত আসে যারা ইরেগুলার হয়ে গেছে। মোট চারটি ভাগে শ্রমিকরা দেশে ফেরত আসছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যাদের চাকরি ছিল কিন্তু করোনার কারণে কোম্পানি বন্ধ হওয়ার কারণে ফেরত এসেছেন সেই সংখ্যাটা আসলে কত? সেটাই হলো মুখ্য বিষয়। যারা ছুটিতে ফেরত এসেছে তারা তো কনসার্ন না। সূত্র : নয়াদিগন্ত

এমজে/