কুয়াশায় মোড়ানো রাজশাহী, দেখা নেই সূর্যের

কুয়াশায় মোড়ানো রাজশাহী, দেখা নেই সূর্যের

কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে শেষ অগ্রহায়ণের স্নিগ্ধ সকাল। রাতের আড়মোড়া ভেঙে সবাই যখন চোখ মেলেছে- ভোরের আলো তখনও ফোটেনি। ঘন কুয়াশার চাদরে মুড়ি দিয়েছে পদ্মাপাড়ের রাজশাহী।

রাজশাহীতে বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) সূর্যোদয় হয়েছে ভোর ৬টা ৩৮ মিনিটে। তবে ঘড়ির কাঁটায় যখন সকাল সাড়ে ৯টা- তখনো সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। ভোরে ঘন কুয়াশার আস্তরণ যেন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো পড়ছিল। সেইসঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়া শরীরে কাঁটা দিচ্ছিল। যতই দিন যাচ্ছে তাপমাত্রার পারদ ততই নিচে নামছে। এ ঘন কুয়াশা কেটে গেলে কামড় বসাবে শীত। বাড়বে জনদুর্ভোগ। এমনটাই পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া অফিস।

এদিকে, ঘন কুয়াশার চাদরে প্রকৃতি ঢাকা পড়লেও জীবিকার তাগিদে সকালে বের হয়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। তবে ঘন কুয়াশায় সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই মহাসড়কের দূরপাল্লার যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। দৃষ্টিসীমা ১০০ মিটারের নিচে নেমে আসায় যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।

ঘন কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে গতি কমেছে ট্রেনেরও। ফলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের আন্তঃনগরসহ বিভিন্ন রুটের ট্রেনের শিডিউল ভাঙতে শুরু করেছে এরই মধ্যে। বিলম্বে চলার কারণে সময় অপচয় হচ্ছে রেলপথ যাত্রীদের। ক’দিন থেকে রাজশাহী-ঢাকা, ঢাকা-রাজশাহী, খুলনা-রাজশাহীসহ বিভিন্ন রুটের আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর নির্ধারিত সময় ঠিক রাখা যাচ্ছে না। বিশেষ করে বৈরী আবহাওয়ায় রাজশাহী-ঢাকা ও ঢাকা-রাজশাহী রুটের আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর সিডিউল নড়বড়ে হয়ে পড়েছে।

আর উত্তরের সড়ক পথেও একই অবস্থা। দুর্ঘটনা এড়াতে ভোরে সড়ক-মহাসড়কগুলোতে ছোট-বড় যানবাহনগুলোকে চলাচল করতে হচ্ছে ধীর গতিতে। ফগ লাইট ব্যবহার করেও চালকরা বাসের গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। কুয়াশার কারণে অনেক সড়কের বাঁক চোখে পড়ছে না চালকদের। ফলে মাঝে-মধ্যেই আচমকা ব্রেক কষছেন। এতে যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন সামনের চেয়ারে।

জানতে চাইলে রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন বলেন, বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন বুধবার (৯ ডিসেম্বর) ছিল ১৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) ছিল ১৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ফলে পরিসংখ্যান বলছে, রাজশাহীর গড় তাপমাত্রা ক্রমশই কমছে। মূলত কুয়াশা কেটে গেলে শীত বাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না বলেও উল্লেখ করেন এ আবহাওয়া পর্যবেক্ষক। অগ্রহায়ণ শেষে পৌষের শুরুতেই রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এক অংকে নেমে আসার আশঙ্কা রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদফতরের এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজকে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। তবে রাত থেকে ভোর পর্যন্ত নদী তীরবর্তী এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা থাকবে। সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া ডিসেম্বরে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

এমজে/