সফরের নামে আমলাদের আনন্দ ভ্রমণে লাগাম টানার নির্দেশ হাইকোর্টের

সফরের নামে আমলাদের আনন্দ ভ্রমণে লাগাম টানার নির্দেশ হাইকোর্টের

যুক্তরাষ্ট্রে গ্রীষ্মকালে পরীক্ষা করেন শীতকালের 'ফগ লাইট'। দেশে এনেও পরীক্ষা করেন গরমকালেই। তাই ৬ কোটি টাকা খরচের পরও, তেমন কাজে আসেনি এই বাতি। সরকারি ৪ কর্মকর্তার এমন কাণ্ডে বিষয়টি গড়ায় আদালতে। এতে সফরের নামে আমলাদের আনন্দ ভ্রমণের লাগাম টানার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

খিচুড়ি রান্না শেখা থেকে শুরু করে ঘাসকাটা। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার নানা প্রকল্পের প্রশিক্ষণ কিংবা পরিদর্শনের জন্য ঝাঁকে ঝাঁকে কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের এমন মুখরোচক খবর শিরোনাম হয় গণমাধ্যমে।

এবারের গল্পটা 'ফগ লাইট' কেনার। ২০১৫ সালে বিআইডব্লিউটিসির ৬ কোটি টাকার ফগলাইট কিনতে আমেরিকা যায় বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, পরিচালক জ্ঞান রঞ্জন শীল, সংস্থাটির জিএম ক্যাপ্টেন শওকত সরদার ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পংকজ কুমার পাল। ৪ সদস্যের এই দলে ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন মাত্র একজন। আমেরিকায় গিয়ে তারা কুয়াশার লাইট পরীক্ষা করেন হোটেলের পাশেই, তাও আবার গ্রীষ্ম কালে। আর সফরে বাকি সময়টা কাটান পুরো পিকনিক মুডে।

দেশের ফিরেও ফগলাইট পরীক্ষা করেন গ্রীষ্ম কালই। মাওয়া আরিচা ফেরি ঘাটে পরীক্ষা করার পর দেখা যায়, ৭ হাজার ওয়ার্ডের ফগ লাইট কাজ করছে ৩ হাজার ওয়ার্ডের সমান। এরই মধ্যে টাকা তুলে নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জনি করপোরেশন। তবে অনিয়ম ধরা পরায় আটকে দেয়া হয় ব্যাংক গ্যারান্টি।

বিষয়টি গড়ায় হাইকোর্টে। বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট এক চূড়ান্ত রায়ে জানান, ওই ফগ লাইট কেনাকাটায় দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। ব্যাংক গ্যারান্টি ফেরতের আবেদন খারিজ করে দেন আদালত।

এই রায়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেনাকাটায় বিদেশ ভ্রমণের নীতিমালাও দিয়ে দেন আদালত। এখন থেকে বিদেশ যেতে চাইলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি অর্থমন্ত্রণালয় ও ক্যাবিনেট ডিভিশনকে জানাতে হবে অবশ্যই।

রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় রুখতে এমন রায় দেয়া হলো বলেও জানান আদালত।